আগামি কথন (ইলহামি জ্ঞান) - ২য় পর্ব - ALHAMDULILLAH MEDIA

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাঁর নিকট তাওবা করি। অত:পর আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আল্লাহ তাআলা কবুল করুক। এই সময়ে ইসলামি ব্লগ অত্যন্ত জনপ্রিয় উঠেছে। এই বিপ্লবের গনজোয়ারে ইসলামের সঠিক ও চূড়ান্ত বার্তা পৌঁছাতে পোষ্ট গুলো বেশি বেশি শেয়ার করুন। আল্লাহ তা আলা আমাদের কবুল করুন। আমিন

Breaking

Home Top Ad

কুরআন ও হাদিসের ভবিষ্যৎবাণী গুলো সবাইকে জানিয়ে সচেতন করতে চাই।

Post Top Ad

এখানে এ্যাড দেওয়া হবে

Wednesday

আগামি কথন (ইলহামি জ্ঞান) - ২য় পর্ব


আগামি কথন এর লেখক আস শাহরান সম্পর্কে আমরা বেশি
তথ্য জানতে পারিনি। তাঁর এই ইলহামি কবিতাটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় এটি দেখে নিশ্চিত যে এটি আল্লাহর মনোনীত কোন বান্দা লিখেছেন আল্লহর কাছ থেকে পাওয়া ইলহাম দিয়ে। তাঁর এই কবিতার সাথে আগামিতে হতে যাওয়া ঘটনাগুলো মিলে যেতে পারে। আর হাদিস থেকেও এটি প্রমানিত যে এতে আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া খাছ ইলহামি জ্ঞান দিয়েই লিখিত। আমি শুধু বলতে পারি, সকল ঘটনা কুরআন ও হাদিছের সাথে সামজ্জশ্যপূর্ণ। আর এটি সেরকম একটি বার্তা আমাদের দেয় সতর্কবাণী হিসেবে যখন কোথাও আল্লাহ আজাব দিবেন তার আগ মুহূর্তে। কেবল জ্ঞানীরাই তা ধরতে পারে। এটি আমাদের জন্য আজাব আসার আগের চূড়ান্ত বার্তা।
প্রতি প্যারায় ৪ টি করে লাইন মোট ১০০ টি প্যারা সমৃদ্ধ ভবিৎষত বানীর এই কবিতাটি আপনাদেরকে অবগত করার জন্য তুলে ধরা হলো ।


প্যারাঃ (১)
সূচনাতেই প্রশংসা তার,
যিনি সৃষ্টি করেছেন জমিন ও আকাশ।
অতিত থাক, আগামীর কিছু কথা,
আমি করিবো প্রকাশ।

প্যারাঃ (২)
বিংশ শতাব্দীর বিংশ সনে,
কিছু করে হের ফের।
প্রকাশ ঘটিবে ভন্ড ''মাহাদী''
ভুখন্ড তুরষ্কের।

প্যারাঃ (৩)
স্বপ্ত বর্ণে নামের মালা,
''হা'' দিয়ে শুরু তার,
খতমে থাকিবে ''ইয়া" - সে,
"মাহাদী" র মিথ্যা দাবিদার।

ব্যাখ্যাঃ ২ ও ৩ নং প্যারাঃ
() নং
লেখক তার ভবিৎষত বাণীতে বর্ণনা করেছেন,
২০২০ সালের কিছু সময় হের ফের করে- (হতে পারে তা ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে শুরু করে ২০২১ সালের শেষ সময় পর্যন্ত। আল্লাহ আলিম)। এ সময়ের মধ্যেই একজন ভন্ড নিজেকে "ইমাম মাহদী" বলে দাবি করবে। সেই ভন্ড তুরষ্ক ভুখন্ডের অধিবাসী হবে।


(৩) নং
তার নাম আরবিতে ৭ টি হরফেতে হবে। যার প্রথম হরফ টি হবে "হা" এবং শেষের হরফ টি হবে "ইয়া"।
আর সেই ব্যাক্তিটি যদিও নিজেকে "ইমাম মাহদী" বলে দাবী করবে, প্রকৃত পক্ষে সে হলো একজন মিথ্যুক, জালিয়াত, প্রতারক, শয়তান। সে প্রকৃত ইমাম মাহদী নয়।


প্যারাঃ (৪)
বাংলা ভূমির দ্বীনের সেনারা,
করিবে মিথ্যার প্রতিবাদ।
জালিমের ভূখন্ড হয়েছিল দু' ভাগ,
সত্য ভাগে হবে ভন্ড বরবাদ।

ব্যাখ্যাঃ
"বাংলা ভূমির দ্বীনের সেনা" বলতে লেখক (আস-শাহারান) বাংলাদেশের 
ঈমানদার নির্ভিকদের বুঝিয়েছেন।
"করিবে মিথ্যার প্রতিবাদ" বলতে লেখক (আস -শাহারান) বুঝিয়েছেন যে সেই ভন্ড যখন নিজেকে "ইমাম মাহাদী" বলে দাবি করবে তখন তারা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাবে।
"জালিমের ভূখন্ড হয়েছিল দু' ভাগ" বলতে লেখক বুঝিয়েছেন যে কোন এক জালিম ভূখন্ড বিভক্ত হয়ে এক ভাগ সত্য দ্বীন কায়েম ছিল - সেই ভাগের দ্বারাই সেই ভন্ড "মাহাদী" র ধ্বংস হবে।
আর সেই জালিমের ভূখন্ড টি হলো "বর্তমান ভারত" যা ইতিপূর্বে বিভক্ত হয়ে "পাকিস্তান" হয়। আর পাকিস্তানে আল্লাহর দ্বীন কায়েম ছিল।
সুতরাং, বোঝা যাচ্ছে যে সেই ভন্ড "মাহাদী" কে পাকিস্তানের মুমিন সেনারা হত্যা করবে।
  
প্যারাঃ (৫)
প্রস্তুত নিবে ক্ষুদ্র সেনারা,
"শীণ"-"মীম" এর নিড়ে।
দিয়ে জয় গান -"আল্লাহ মহান",
আঘাত হানিবে শত্রুর ঘাড়ে।

ব্যখ্যাঃ লেখক (আস- শাহরান) ভবিষ্যৎবাণীতে বলেছেন যে, কোন এক দেশের কোন এক স্থানে মুসলিম মুমিন, ঈমানদার সেনারা শত্রু দল কে আঘাত করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে তারা সংখ্যায় এখন সীমিত।
তবে একটি বাক্য লক্ষনীয় যে, “শীন-মীম এর নিড়ে” তারা প্রস্তুত হচ্ছে।
কথাটির তর্জমা এরুপ যে, যে মুমিন সেনারা প্রস্তুত হচ্ছে তাদের আমির দুইজন।
একজন প্রধান আমীর। এবং অন্য জন নায়েবে আমির বা প্রধান আমিরের সহচর।
তাদের একজনের নামের প্রথম হরফ শীন এবং অন্যজনের মীম দিয়ে শুরু।

প্যারাঃ (৬)
অতি সত্তর পাঞ্জাব কেন্দ্রে,
গাইবে মুমিনেরা জয়গান।
একটি শহর আসিবে দখলে,
ঈমানদার দের খোদার দান।

ব্যখ্যাঃ লেখক আস- শাহরান এই পর্বে বলেছেন যে, পাঞ্জাব কেন্দ্রে অর্থাৎ কাশ্মীরে মুমিনদের সাথে কাফের দের একটি যুদ্ধ সংঘটিত হবে। যা বর্তমানে চলছে।
সেই যুদ্ধে দ্রুতই মুমিনদের বিজয় হবে। কাফেরদের পরাযয় হবে। মুমিনেরা কাশ্মীর শহর দখল করবে। দ্বিন কায়েম করবে।
*অর্থাৎ, বোঝা গেলো যে, বর্তমানে ভারত ও পাকিস্থানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে যে যুদ্ধটি চলছে, তাতে অতি সত্ত্বর মুমিনদের বিজয় হবে।
ভারতের কাছ থেকে কাশ্মীরকে ছিনিয়ে নিবে মুমিনগন।
*এই বিজয়ের মাধ্যমে, মহান আল্লাহ মুমিনদের একটি শহর দান করবেন এবং
শাহ নেয়ামত উল্লাহর "ক্বাসিদাহ" ও আস-শাহরাণ এর "আগামি কথন" এর
ভবিৎষত বানীর পূর্ন বাস্তবিক প্রতিফলন ঘটাবে।

প্যারাঃ (৭)
অতঃপর দেখবে নদী পাড়ে,
সকল বিশ্ববাসীগন।
চাক্বচিক্কেই হয়না সোনা,
বুঝবেনা তা লোভীদের মন।

ব্যখ্যাঃ আগামী কথন কবিতায় লেখক (আস-শাহরান) এই পর্বে বলেছেন যে, কাশ্মীর বিজয় হওয়ার পর হঠাৎ কোন একদিন নদীর পাড়ে বিরাট একটি সোনার পাহাড় দেখতে পাবে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- এর সেই হাদিসটির বাস্তবায়ন হবে যে,
"কিয়ামত ততদিন পর্যন্ত হবে না যতদিন না ফুরাত নদী থেকে সোনার পাহাড় ভেসে না উঠবে। তোমরা কেউ তখন থাকলে তা থেকে কোন অংশই নিবে না"
আগামী কথনে বলা হয়েছে যে,
চাক্বচিক্কেই হয়না সোনা, বুঝবেনা তা লোভিদের মন”।
এর দ্বারা আসলে এটা বোঝানো হয়েছে যে, ঐ সোনা খাটি সোনার মত চকচক করলেও তা আসলে একটি বড় পরীক্ষা যে কার ঈমান কেমন। কে আল্লাহ ও তার রছুলের নিষেধ মান্য করে আর কারা সীমা লঙ্ঘন করে।





প্যারাঃ (৮)
একটি " শীন", দুইটি "আলিফ",
তিন ভুখন্ডেই হবে ঝড়।
বিদায় জানালো মহাদূত
তার তের-নব্বই-এক পর।


ব্যখ্যাঃ এই পর্বে লেখক আস- শাহরান, একটু অস্পস্ট ভাবে বাক্য উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন যে, সেই ফুরাত নদীর স্বর্নের পাহাড় দখলে আনার জন্য তিনটি রাষ্ট্র যুদ্ধে জড়িয়ে পরবে। সেই ৩ টি দেশের নামের প্রথম হরফ এখানে লেখক উল্লেখ করছেন। আর তা হলো,
(১) শীন (২) আলিফ এবং (৩) আলিফ।
যেহেতু ফুরাত নদী তুরষ্ক থেকে উৎপন্ন হয়ে, আরবের পাশ দিয়ে শাম বা শিরিয়া অঞ্চল দিয়ে ইরাক পর্যন্ত বিস্তৃত। তাই সহজেই অনুধাবন করা যায় যে,
(১) শীন হলো শাম বা শিরিয়া অঞ্চল এবং (২) আলিফ হলো ইরাক।
তাহলে (৩) নং আলিফ কোন দেশ?
(পরবর্তী প্যারায় প্রকাশিত)
এখন প্রশ্ন হলো কবে কত সালে এই সোনার পাহাড় প্রকাশ পাবে?
এ প্রসঙ্গে (আস-শাহরান) বলেছেন যে,
“বিদায় জানালো মহাদূত
তার তের নব্বই এক পর”।
কে এই মহাদূত?
আমরা সবাই জানি যে, মানবতার মুক্তির মহা দূত হলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় জানিয়েছেন ৬৩২ খ্রীঃ তে।
আর ১৩-৯০-১ মানে লেখক এখানে ১৩৯১ বছর বুঝিয়েছেন।
সুতরাং ৬৩২+১৩৯১ = ২০২৩
অর্থাৎ, এখানে লেখক(আস-শাহরান) ভবিষ্যৎবাণী করে বলেছেন যে, আগামী ২০২৩ সালের যে কোন সময়ই ফুরাত নদী থেকে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠবে। যেটা কিয়ামতের অন্যতম আলামত।

প্যারাঃ (৯)
যে ভূমি থেকে দিয়েছিলো নিষেধ,
খোদার প্রিয় নবী।
নিষেধ ভুলিবে, করিবে রণ,
তাতে হইবেনা কামিয়াবি।

ব্যাখ্যাঃ এই প্যারায় লেখক (আস-শাহরান) বলেছেন যে, মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে দেশ থেকে ঐ স্বর্নের খনী দখল করতে যাওয়ার নিষেধ করেছিলেন তার নিষেধ ভুলিয়া ঐ দেশটিও লোভের বশিভুত হয়ে ফুরাত নদীর সোনার পাহাড় দখল করতে লড়াই করবে। অর্থাৎ, সৌদি আরব ও যুদ্ধ করবে সোনার লোভে।
এই প্যারা থেকে প্রমানিত যে, (৩) নং আলিফ নামক দেশটি হলো "আরব/সৌদি আরব"!
 যে ৩টি দেশ আল্লাহর রছুল (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিষেধ অমান্য করে ফুরাত নদীর সোনার পাহাড় দখল করতে যুদ্ধের সুচনা করবে সেই ৩ টি দেশ হলো,
(১) শিরিয়া, (২) ইরাক ও (৩) আরব।
কিন্তু কেউ ই সেই যুদ্ধে সফলতা পাবে না।

প্যারাঃ (১০)
দুপক্ষ কাল চলিবে লড়াই,
দখল করিতে জলাংশ।
প্রতি নয় জনের, সাত জনই হায়,
হইবে সে রনে 
ধ্বংস

ব্যাখ্যাঃ লেখক(আস-শাহরাণ) ভবিৎষত বানিতে বলেছেন যে, ফুরাত নদীর সোনার পাহাড় দখল করার জন্য শিরিয়া, আরব ও ইরাক দুই (২) পক্ষ কাল সময় ধরে যুদ্ধে লিপ্ত থাকবে।
আমরা জানি যে,
১ পক্ষ কাল সময় = ১৫ দিন। সুতরাং, ২ পক্ষ কাল = ৩০ দিন।
অর্থাৎ, সোনার খনি দখল করতে ১ মাস যুদ্ধ চলবে শিরিয়া, ইরাক ও আরবে। ২০২৩ সালের যে কোন মুহর্তে। আর সেই যুদ্ধে যত জন অংশ গ্রহন করবে তাদের প্রতি ৯ জনের মধ্যে ৭ জন করেই মারা পরবে।

প্যারাঃ (১১)
যেখান থেকে এসেছিলো ধন,
চলে যাবে সেথায় ফের।
বুঝছোনা কেন? এটা তোমাদের,
পরীক্ষা ঈমানের।

ব্যখ্যাঃ এই প্যারায় লেখক আস-শাহরান ভবিষ্যৎবাণী করে বলেছেন যে, ঐ সোনার খনি যেখান থেকে এসেছিল আবার সেখানেই ফেরত চলে যাবে।
অর্থাৎ, ফুরাত নদী থেকে যে সোনার খনি উঠবে, তা ১ মাসের কিছু কম-বেশ সময়ের মধ্যেই আবার জলের মধ্যে ডুবে যাবে। অদৃশ্য হয়ে যাবে। মাঝখানে মহান আল্লাহ মানুষের ইমানের পরীক্ষা নিবেন।
(আমরা জানি যে ইরাক, আরব ও শিরিয়া তিনটি দেশই ইসলামিক দেশ। আর তারাই নাকি আল্লাহর রছুল (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিষেধ লঙ্ঘন করে ফিতনায় পতিত হবে! {ভবিৎষতদ্বানী অনুযায়ী} তাই তো আল্লাহ তাদের গজবে ধ্বংস করবেন)

প্যারাঃ (১২)
একটি শহর পেয়েছে মুমিনেরা,হারাইবে অনুরুপ একটি। 
স্বাধীনতার অর্ধ-শতাব্দীরও পর,
হাত ছাড়া হবে দেশটি।

ব্যখ্যাঃ এই প্যারায় লেখক আস-শাহরান উল্লেখ করেছেন যে একটি শহর মুমিনরা পাবে। (কাশ্মীর) যা ৬ নং প্যারায় বলা হয়েছে যে মুনিনেরা দখল করবে। আবার একটি শহর তাদের হাতছাড়া হবে।
অর্থাৎ, হিন্দুস্থান আবার একটি ইসলামিক দেশ দখল করে নিবে।
যে দেশটি দখল করবে, সে দেশটি তার ৫০ বছরেরও কিছুকাল পূর্বে স্বাধীনতা লাভ করেছিলো।
(হতে পারে ৫২ -৫৩ বছর। যেহেতু অর্ধশতাব্দীর পর বলা নেই।
 বলা আছে "অর্ধ শতাব্দীরও পর")
(উপরক্ত ব্যখ্যাঃ আস্-শাহরানের মুল গ্রন্থ হতে নেওয়া)
তবে আস-শাহরান উল্লেখ করে না বললেও ইঙ্গিত করেছেন যে সেটা কোন দেশ।
(
পরবর্তী প্যারা গুলোতে তা আরো স্পষ্ট হবে।)

প্যারাঃ (১৩)
পঞ্চ হরফ "শীন"-এ শুরু,
"নুন" -এ খতম নাম।
মিত্র দলের আশ্রয়েতে,
নেতা হইবে অপমান।

ব্যখ্যাঃ এখানে লেখক আস-শাহরান এক জন দেশ প্রধানের কথা বলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, মুমিনরা যে দেশটি হারাবে সে দেশটির প্রধান এর নাম ৫ টি হরফের হবে।
তার প্রথম অক্ষর হবে, শীন= শ এবং নুন= ন।
সেই নেতার সাথে মুশরিক দলের মিত্রতা বা বন্ধুত্ব থাকবে।
আর সেই বন্ধু দলই তাকে ঠকিয়ে তার দেশ কেড়ে নিবে।

প্যারাঃ (১৪)
ফিতর-আযহার মাঝখানেতে,
বোঝাইবেন আল্লাহ তা-য়ালা।
মুসলিম নেতা হয়েও,
কাফেরের বন্ধু হবার জ্বালা।

প্যারাঃ (১৫)
ছাড়বে সে যে শাষন গদি,
থাকবেনা বেশি আর।
দেশের লোকে দেখে তাকে,
জানাইবে ধিক্কার।

ব্যখ্যাঃ (১৪)+(১৫)
এই দুই প্যারায় লেখক আস-শাহরান উল্লেখ করেছেন যে, জালিম হিন্দুরা যে ভুমিটি দখল করে নিবে সে ভুমির নেতার সাথে ইদুল ফিতর ও ইদুল আযহার মধ্যেই কাফের নেতা ও সেই মুসলিম নেতা যার ভুমি দখল করা হবে তাদের উভয়ের মধ্যে এমন কোন কিছু একটা হবে যার ফলে সেই মুসলিম নেতাটিকে আল্লাহ সরাসরি বুঝিয়ে দিবেন যে মুসলিমদের নেতা হয়েও কাফেরদের বন্ধু হলে কি অপমানিত হতে হয়, আল্লাহ কতটা শাস্তি প্রদান করেন।

শাহ নেয়ামত উল্লাহ-র ক্বাসিদাহ তে ও এই ধরনেরই একটি ভবিৎষতদ্বানী করা আছে। তাতে বলা আছে যে,
“মুসলিম নেতা অথচ বন্ধু 
কাফের তলে তলে,
মদদ করিবে অরি কে সে এক,
পাপ চুক্তির ছলে”।
(ক্বাসিদাহ, প্যারাঃ ৪০)
অর্থাৎ, সেই দুই নেতার মধ্যে গোপনে হয়তোবা কোন একটি চুক্তি হবে। যা কঠিন পাপ।
এরই ফল স্বরুপ "আগামী কথন"- এর ১৫ নং প্যরায় বলেছেন যে,
সেই নামধারি মুসলিম নেতা তার শাষন গদি হারিয়ে ফেলবে। সে মিত্রদলের চক্রান্তের শিকার হবে। তার দেশটি কাফেররা দখল করবে। দেশের লোকে তাকে ধিক্কার দিতে থাকবে।
(ভবিৎষতদ্বানী অনুযায়ী)

প্যারাঃ (১৬)
কাশ্মীর হারিয়ে কাফের জাতি,
ক্ষিপ্ত থাকিবে যখন।
ছলনা বলে দুসনের মাঝেই,
তারা করিবে পার্শভুম দখল।

ব্যখ্যাঃ এ প্যারার ব্যখ্যাতে (আস-শাহরান) বলেছেন যে, কাশ্মীর নিয়ে মুমিনদের সাথে যুদ্ধ সংঘটিত হলে সে যুদ্ধে মুমিনদের বিজয় আসবে। অর্থাৎ, মুমিনগন তা দখল করে নিবে। হিন্দুস্থান তা হারিয়ে ফেলবে।
অতঃপর, কাশ্মীর হারিয়ে তারা (ভারতবাসী) যখন ক্ষিপ্ত থাকবে, তখন তারা কাশ্মীর হারানোর দুই(২) বছরের মধ্যেই তাদেরই কোন একটি পার্শভুম অর্থাৎ পাশের ভুমি/দেশ দখল করে নিবে। যে ভুমিটি দখল করবে, তার নেতার কথাই পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, মুসলিম হয়েও মুশরিক (মূর্তিপূজক) দের সাথে বন্ধুত্ব থাকবে। তারপর তার বন্ধুরাই তার দেশটি দখল করে নিবে। (ভবিৎষতদ্বানী অনুযায়ী)
কিন্তু সে ভুমি টি আসলে কোন দেশ? মূর্তিপূজারীরা সেই মুসলিমদের দেশটি দখল করে সেখানে কি করবে? প্রশ্ন কি জাগছে মনে?? প্রশ্ন থাকলে উত্তর তো থাকবেই।

প্যারাঃ (১৭)
পাপে লিপ্ত হিন্দবাসী, সে ভুমে,
ছাড়াইবে শোয়া কোটি ছয় খুন।
চোখের সামনে ইজ্জত 
হারাইবে,
লক্ষ-কোটি মা বোন।

প্যারাঃ (১৮)
সময় থাকতে হয়ে যেও জোট,
সেই সবুজ ভুখন্ডের যুবকগন।
অচিরেই দেখবে চোখের সামনে,
হত্যা হবে কত প্রিয়জন।

ব্যাখ্যাঃ (১৭)+(১৮)
এই দুইটি প্যারায় লেখক (আস-শাহরান) উল্লেখ করছেন যে, যে ভুমিটি হিন্দুস্থানেরা দখল করে নিবে সেই ভুমি দখল করার পর তারা সেখানে একাধারে গনহত্যা চালাতে থাকবে। নির্বিচারে মানুষ হত্যা করতে থাকবে।
লক্ষ-কোটি মা বোনের ইজ্জত হরণ করবে।
কতজন মানুষ হত্যা করবে সে সম্মন্ধে লেখক (আস-শাহরান) একটি ভবিৎষতদ্বানী করেছেন। আর তা হলো,
"পাপে লিপ্ত হিন্দবাসী সে ভুমে
ছাড়াইবে শোয়া-কোটি ছয় খুন"
অর্থঃ ভারত সেই দেশটি দখল করার পর সেই দেশে শোয়া কোটি = ১ কোটি ২৫ লক্ষ এবং, আরও একটি সংখ্যা দেওয়া হয়েছে তা হলো ছয় (৬) এর অর্থ ৫ টি হয়। আর তা হলো,
১। শোয়া কোটি ৬ শত।
২। শোয়া কোটি ৬ হাজার।
৩। শোয়া কোটি ৬ লক্ষ।
৪। শোয়া কোটি এবং আরও ৬ কোটি।
বা, ৫। শোয়া কোটি কে ৬ দ্বারা গুন করা।
= ৭ কোটি ৫০ লক্ষ।
(বিঃ দ্রঃ এখানে আগামী কথনের ১৯ নং প্যারায় বলা আছে যে,
"আহাজারি আর কান্নায় ভারী,
সে ভুমি হইবে ঘোর কারবালা"
(আগামী কথন, প্যারাঃ ১৯)
এবং কাসিদাহ তেও বলা আছে,
হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে
চালাইবে তারা ভারী।
ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা,
ক্রন্দন আহাজারি”।
(ক্বাসিদাহ,প্যারাঃ ৩৯)
অর্থঃ দুই ভবিৎষতদ্বানীর বইতেই প্রমান পাওয়া যাচ্ছে যে, যে ভুমিটি হিন্দুস্থানেরা দখল করে নিবে সেখানে তারা এমন হত্যা-ধ্বংস চালাবে যে "দ্বিতীয় কারবালা" সংঘটিত হবে।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে, প্রচুর মানুষ হত্যা হবে। তাই ৭ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হবে সেটিই প্রসিদ্ধ মত।
এখানে প্রশ্ন হলো কোন দেশে এই বিপদটি ঘনিয়ে আসতে চলেছে?
সেটা ভারতের পাশের দেশ।
মুসলমানদের দেশ।
সে দেশের রাজা নামধারি মুসলিম হবে এবং কাফেরদের বন্ধু হবে।
সেই ভুমিটিকে সবুজের ভুমি বলা হবে।
তাহলে ধারনা করতে পারছেন কি সেটা কোনদেশ?


প্যারাঃ (১৯)
আহাজারী আর কান্নায় ভারী,
সে ভুমি হইবে ঘোড় কারবালা।
খোদার মদদে "শীন" "মীম" সেক্ষণে,
আগাইবে করিতে শত্রুর মুকাবিলা।

ব্যখ্যাঃ এই প্যারায় লেখক বলেছেন যে, হিন্দুস্থান যে দেশটি দখল করবে, সে দেশের ঘরে ঘরে কারবালা শুরু করে দিবে। ৭ কোটি ৫০ লক্ষ (কিছু কমবেশ, আল্লাহ আলিম) মানুষ হত্যা করবে। মুসলমানদের এই বিপদে আল্লাহ সাহায্য পাঠাবেন।
এখানে উল্লেখ্য হলো,
মুসলমানদের সেই বিপদ মুক্তির উছিলা হবে দুই জন। শীন ও মীম হরফ দিয়ে তাদের নাম শুরু হবে। তারা আল্লাহর প্রেরিত দূত হবে।
এখন স্মরণ করুন, আগামী কথন এর ৫ নং প্যারা।
সেখানে বলা আছে যে,
“প্রস্তুত নিবে ক্ষুদ্র সেনারা,
"শীন" "মীম" এর নিড়ে।
দিয়ে জয়গান আল্লাহ মহান,
আঘাত হানিবে শত্রুর ঘাড়ে”।
(আগামী কথন, প্যারাঃ ৫)
তাহলে বোঝা গেলো যে, হিন্দুস্থানিরা যখন মুসলমানদের একটি দেশ দখল করে সেখানে "দ্বিতীয় কারবালা" শুরু করবে তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত একটি দল সেই শত্রুর মোকাবিলা করতে সামনে অগ্রসর হবে।
তাহলে সে সময়ই এই শীন এবং মীম এর প্রকাশ ঘটবে। ইংশাআল্লাহ।

প্যারাঃ (২০)
"শীন" সে তো "সাহেবে কিরান",
"মীম"-এ "হাবিবুল্লাহ"!
জালিমের ভুমিতে ঘটাইবে মহালয়,
সাথে আছে "মহান আল্লাহ"!

ব্যখ্যাঃ এই প্যারায় লেখক (আস-শাহরান) সে পূর্বে আলোচিত "শীন" ও "মীম" এর পরিচয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন,
"শীন" হলো সাহেবে কিরান এবং "মীম" হলো "হাবিবুল্লাহ"! 
অর্থাৎ, শীন হরফ দিয়ে যার নামটি শুরু তার উপাধি হলো সাহেবে কিরান!
মীম হরফ দিয়ে যার নামটি শুরু তার উপাধি হলো হাবিবুল্লাহ!
এখন প্রশ্ন হলো কে এই সাহেবে কিরান?
আর কে এই হাবিবুল্লাহ?
এই সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহর কথা এসেছে আজ থেকে প্রায় ৮৫০ বছর পূর্বে শাহ নেয়ামতউল্লাহ লেখা ভবিৎষতদ্বানীর কবিতা "ক্বাসিদাহ" তে। বলা হয়েছে যে,
“সাহেবে কিরান, হাবিবুল্লাহ,
হাতে নিয়ে শমসের।
খোদায়ি মদদে ঝাপিয়ে পড়বে,
ময়দানে যুদ্ধের”।
অর্থাৎ, বোঝা গেলো যে, এই শীন ও মীম বা সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহ ই গাজওয়াতুল হিন্দের মহানায়ক।

প্যারাঃ (২১)
"হাবিবুল্লাহ" প্রেরিত আমির,
সহচর তার "সাহেবে কিরান"।
কিরানের হাতে থাকিবে জিহাদের,
কুদরতি অস্র "উসমান"!

ব্যখ্যাঃ এখানে লেখক (আস-শাহরান) দুইটি ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করলেন, তা হলো,
১। "মীম" হরফে নামের শুরু তার উপাধিই হলো "হাবিবুল্লাহ"। তিনি আল্লাহ প্রদত্ত নেতা বা আমীর বা ইমাম।
 
২। "শীন" হরফে নামের শুরু তার উপাধিই হলো "সাহেবে কিরান"। তিনিও আল্লাহ প্রদত্ত কিন্তু নেতা নয়। প্রধান নেতা (হাবিবুল্লাহ)-র সহচর বা বন্ধু!
(যেমনঃ হযরত মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সহচর বা বন্ধু ছিলেন হযরত আবু বকর (রাঃ) তাদের ন্যায়।)
হাবিবুল্লাহ = আল্লাহর বন্ধু। এবং,
সাহেবে কিরান = "শনি ও বৃহস্প্রতি গ্রহ বা শুক্র ও বৃহস্প্রতি গ্রহ একই রৈখিক কোণে অবস্থানকালীন সময়ে যে যাতকের জন্ম হয় অথবা এ সময়ে যে যাতকের ভ্রূন মাতৃগর্ভে সঞ্চার হয় সেই যাতক কে "সাহেবে কিরান" বা "অতি সৌভাগ্যবান" বলা হয়।
আর বলা হয়েছে যে, হিন্দুস্থানের সাথে মুসলমানদের মহা যুদ্ধের মূল চরিত্র বা সেনাপতিই হলো তারা দুজন।
১। সাহেবে কিরান।
২। হাবিবুল্লাহ।
আর যুদ্ধের সময় এই সাহেবে কিরানের হাতেই থাকবে একটি কুদরতি অস্র। যার নাম 
(“উসমান”) 
যা অলৌকিক ক্ষমতা সম্পুর্ন।
এই সাহেবে কিরান, হাবিবুল্লাহ এবং উসমান অস্ত্রকে নিয়ে শাহ নেয়ামতউল্লাহ তার ক্বাসিদাহ গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেন যে,
“সাহেবে কিরান, হাবিবুল্লাহ,
হাতে নিয়ে শমশের।
খোদায়ি মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে,
ময়দানে যুদ্ধের”।
(ক্বাসিদাহ, প্যারাঃ ৪৪)
এবং
“সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যপিয়া,
প্রচন্ড আলোড়ন।
উসমান এসে নিবে জিহাদের,
বজ্র কঠিন পন”।
(ক্বাসিদাহ, প্যারাঃ ৪৩)
এখানে "উসমান" বলতে এই নামের একটি "অস্র" কে বোঝানো হয়েছে, যা যুদ্ধের সময় সাহেবে কিরান হাতে ধারন করবে। এবং হাবিবুল্লাহ সেই যুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদান করবেন । (ভবিৎষতদ্বানী অনুযায়ী)

প্যারাঃ (২২)
বীর গাজিগন আগাইবে জিহাদে,
করিবে মরন-পণ মহারণ!
খোদার রাহে করিবে হত্যা,
অসংখ্য কাফেরকে মু'মিন গন।

ব্যখ্যাঃ এই প্যারায় লেখক আস-শাহরান একটি সুস্পষ্ট বিষয় তুলে ধরেছেন। আর তা হলো,
গাজওয়াতুল হিন্দ। (হিন্দুস্থান বিজয়ের যুদ্ধ)
আগামী কথন এর ২২ নং প্যারা থেকে প্রমানিত যে, হিন্দুস্থানে ইসলাম কায়েম করার যে মহা যুদ্ধ সংঘটিত হবে (গাজওয়াতুল হিন্দ) সেই মহা যুদ্ধের মুল চরিত্র বা এই গাজওয়াতুল হিন্দের সেনাপতি হলো সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহ।
তাদের নেতৃত্বেই অসংখ্য মুমিন গন হিন্দুস্থানের দিকে অগ্রসর হবেন গাজওয়াতুল হিন্দের সত্যায়ন ঘটাতে অর্থাৎ, হিন্দুস্থান যে দেশটি দখল করে "দ্বিতীয় কারবালা" শুরু করবে, সেই দেশ থেকেই গাজওয়াতুল হিন্দের জন্য মুমিনগন ভারতের দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বে।
আর তা কাশ্মীর বিজয় মুমিনদের দখলে যাওয়ার, দুই (২) বছরের মধ্যেই সংঘটিত হবে।
(ক্বাসিদাহ ও আগামী কথন এর ইলহামি ভবিৎষতদ্বানী 
অনুযায়ী!)

প্যারাঃ (২৩)
সে ক্ষনে মিলিবে দক্ষিনী বাতাস,মুমিনদের সাথে দুই আলিফদ্বয়মুশরিক জাতি পরাজয় মানবে,মুমিনদের হইবে বিজয়

ব্যাখ্যাঃ এই প্যারায় আস-শাহরান ভবিৎষতদ্বানী করে বলেছেন যে, সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বে গাজওয়াতুল হিন্দের জন্য যখন মুমিনগন ভারতে দিকে অগ্রসর হবে ও যুদ্ধ চালাবে তখন মুমিনদের সাহায্যের তাগিদে মহান আল্লাহ তাআলা দুইটি ইসলামি দল বা দেশ কে মুমিনদের দলে যোগ করিয়ে দিবেন।
সেই দুইটি দল বা দেশের নামের প্রথম হরফ হবে আরবির "আলিফ" হরফ দিয়ে। বীর গাজি মুমিনদের সাথে তারা যোগদান করে হিন্দুস্থানের মুশরিকদের পরাজিত করবে।
হিন্দুস্থান পুরোপুরি মুমিন মুসলিমদের দখলে চলে আসবে।
এই প্রসঙ্গে হযরত শাহ নেয়ামতউল্লাহ (রঃ) তার ভবিৎষত বাণীর কবিতা বই "ক্বাসিদাহ" এ ইলহামি ভবিৎষতদ্বানী করে বলেছেন যে, যখন মুমিনেরা সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বে ভারত বিজয়ের জন্য ভারতে মহা যুদ্ধে লিপ্ত হবে তখন মুমিনদের পাশে,

“মিলে একসাথে দক্ষিনী ফৌজ,
ইরানি ও আফগান।
বিজয় করিয়া কবজায় পুরা,
আনিবে হিন্দুস্থান”।
(ক্বাসিদাহ, প্যারাঃ ৪৭)
আগামি কথনের এই প্যারায় বলা আছে যে,
গাজওয়াতুল হিন্দের সময় সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহর দলে যে দুই দেশ যোগ দিবে এবং হিন্দুস্থান বিজয় করে পুরোপুরি মুসলমানদের দখলে আনবে সেই দেশ দুইটি হলো
১। ইরান। ও
২। আফগানিস্থান।
অতএব, জানা গেলো যে, সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহর দলে ইরান এবং আফগানিস্থানের মিলিত হবার পর এই তিন (৩) দলের সংঘবদ্ধ শক্তির উছিলায়ই মহান আল্লাহ গাজওয়াতুল হিন্দে মুসলমানদের বিজয় দান করবেন।
যে বিজয়ের ওয়াদার ভবিৎষতদ্বানী হিসেবে মহান আল্লাহ তার প্রিয় রছুল (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মাধ্যমে অনেক পূর্বেই দান করেছিলেন। 
এবং ক্বাসিদাহ তে শাহ নেয়ামতউল্লাহ এবং আগামী কথন এ আস-শাহরান ইলহামি ভবিৎষতদ্বানী করেছেন।

প্যারাঃ (২৪)
দ্বীন থেকে দূরে ছিলো সে যে,
ছয় (৬) হরফেতে তাহার নাম।
প্রথমে "গাফ" খতমে "শাহা",
স্ব-পরিবারে আনিবে 
ঈমান

ব্যখ্যাঃ আলহামদুলিল্লাহ। এই প্যারায় লেখক আস-শাহরান বলেছেন যে,যখন গাজওয়াতুল হিন্দ অর্থাৎ, হিন্দুস্থান বিজয়ের যুদ্ধ চলবে এর কোন এক সময় হিন্দুস্থানের একজন মূর্তিপূজারী ইসলাম ধর্ম গ্রহন করবে এবং তার পরিবারও ইসলাম কবুল করবে!
এখন কথা হলো, হাজার হাজার বেধর্মিরাইতো ইসলাম কবুল করবে। তাহলে এই ব্যাক্তিটির নামই কেন প্রকাশ করা হলো? কে এই ব্যক্তিটি?
লেখক আস শাহরান তার আংশিক পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন যে, তার নাম ৬ টি অক্ষরে হবে। প্রথম অংশ হবে "গাফ" এবং শেষের অংশ হবে, "শাহা"! (পদবি)
অর্থাৎ নাম টি হবে, "শ্রী" "গাফ - -" "শাহা"।
বিশেষ লক্ষনীয় বিষয় যে, এই ব্যক্তিটির সমন্ধে শাহ নেয়ামতউল্লাহ (র) তার বিখ্যাত ভবিৎষতদ্বানীর কবিতা ক্বাসিদাহ তে বলেছেন যে,

“দ্বীনের বৈরি আছিলো শুরুতে,
ছয় হরফেতে নাম।
প্রথম হরফে "গাফ"-সে,
কবুল করিবে দ্বীন ইসলাম”।
(ক্বাসিদাহঃ প্যারাঃ ৪৯)
অতএব, বোঝা যাচ্ছে যে ঐ ব্যাক্তিটির দ্বারা ইসলামের অনেক উপকারিতা রয়েছে।

প্যারাঃ (২৫)
হিন্দুস্থানেই হিন্দু রেওয়াজ,
থাকিবেনা তিল পরিমান।
আল্লাহর খাছ রহমত হবে,
মুমিনদের উপর বরিষান।

ব্যাখ্যাঃ এই প্যারায় লেখক আস-শাহরান বলেছেন যে, গাজওয়াতুল হিন্দের পর হিন্দুস্থানে হিন্দুদের শিরকি কুফুরি কোন প্রকার রীতিনীতিও থাকবে না এবং হিন্দুদের কোন চিহ্ন ও থাকবে না।
এ সময়টি তখনই আসবে যখন কাশ্মীর বিজয় হবে এবং এর দু বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে হিন্দুস্থানীরা দ্বিতীয় কারবালা করবে। তারপর মুমিনগন "সাহেবে কিরান ও হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বে ভারত পানে গাজওয়াতুল হিন্দ বা হিন্দের যুদ্ধ করবে। এর আগে থেকেই তাদের নীড়ে ক্ষুদ্র সেনারা গোপনে জিহাদের (গাজওয়াতুল হিন্দের) প্রস্তুতি নিতে থাকবে। (তাদের সম্পর্কে জানতে আখিরুজ্জামান গবেষণা ও তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ বইটি পড়তে পারেন।)

প্যারাঃ (২৬)
অন্যত্র পশ্চিমা বিশ্ব তখন,
সৃষ্টি করিবে বিপর্যয়।
তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে,
ঘটাইবে বড় মহালয়।

ব্যাখ্যাঃ যখন গাজওয়াতুল হিন্দ চলতে থাকবে ঠিক ঐ সময়ই পশ্চিমা বিশ্বে বিরাটাকার বিপর্যয় নেমে আসবে। এর ফলশ্রুতিতে ৩য় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হবে।

দ্বিতীয় বিশ্ব সমর শেষে,
আষি বর্ষ পর।
শুরু হবে ফের অতি ভয়াবহ,
তৃতীয় বিশ্ব সমর।

ব্যাখ্যাঃ লেখক আস-শাহরান প্রকাশ করেছেন যে, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হবার ৮০ বছর পর আরো ভয়াবহ আকারে ৩য় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হবে।
আমরা সবাই জানি যে, ২য় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে ১৯৪৫ সালে। 
অতএব, ১৯৪৫+৮০=২০২৫ সাল।
অর্থাৎ, ২০২৫ সালেই গাজওয়াতুল হিন্দের চলাকালীন সময়ই ৩য় বিশ্বযুদ্ধের সুচনা হবে।

প্যারাঃ (২৮)
কুর্দি কে এ রনে করিবে ধ্বংস,
কঠিন হস্তে আরমেনিয়া।
আরমেনিয়ায় ঝড় তুলিবে,
সম্মুখ সমরে রাশিয়া।

ব্যাখ্যাঃ আস-শাহরান বলেছেন, কুর্দিকে এই ৩য় বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংস করবে আরমেনিয়া। এবং আরমেনিয়ার সাথে লড়াইয়ে মাতবে রাশিয়া।
কুর্দি =যারা ইরাক, সিরিয়া, ও ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় এবং তুরষ্কের পূর্বাঞ্চলীয় বাসিন্দা।
আরমেনিয়া = ইরানের উত্তরে এবং তুরষ্কের পূর্বদিকে, কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরের মাঝে অবস্থিত।

রাশিয়া পাইবে কঠিন শাস্তি,
মাধ্যম হইবে তুরষ্ক।
তাহার পরেই এই মাধ্যমকে,
কুর্দি করিবে 
ধ্বংস

ব্যাখ্যাঃ তারপর রাশিয়ায় আক্রমন চালাবে তুরষ্ক। আর ঠিক তখন তারপরই তুরস্ককে কুর্দি জাতি আক্রমন করে ধ্বংস করে দিবে।

প্যারাঃ (৩০)
এরই মাঝেই চালাবে তান্ডব,
পার্শদেশ কে হিন্দুস্থান।
বজ্রাঘাতে হইবে 
ধ্বংস,
বেইমানের হাতে পাকিস্থান।

ব্যাখ্যাঃ এর মাঝেই ভারত তখন পাকিস্থানের উপর তান্ডব চালাবে। তারা বজ্রাঘাতে (পারমানবিক বোমা হামলার মাধ্যমে) পাকিস্থানকে ধ্বংসপ্রাপ্ত করবে।

প্যারাঃ (৩১)
তাহার পরেই হিন্দুস্থান কে,ধ্বংস করিবে তিব্বত।
তিব্বত কে করিবে সে রনে তখন,
একটি আলিফ বধ।

ব্যাখ্যাঃ আস-শাহরান বলেছেন যে, যখন পাকিস্থান কে ভারত ধ্বংস করে দিবে তখন চিন (তিব্বত) তখন আবার ভারতকে ধ্বংস করে দিবে। এবং তার পরপরই চিন কে আবার একটি দেশ ধ্বংস করবে, বধ করবে। সে দেশটির নাম আরবীতে "আলিফ" হরফে শুরু।

চতূর্মূখী বজ্রাঘাতে সে,
"আলিফ" হইবে নিঃশ্বেষ।
ইতিহাসে শুধুই থাকিবে নাম,
মুছে যাবে সেই দেশ।

ব্যাখ্যাঃ আলিফ নামক দেশটি কে তারপর চতুর্মূখী আক্রমন চালানো হবে। যার ফলে ইতিহাসে শুধু ঐ দেশটির নামই কেবল থাকবে, কিন্তু তার বিন্দু পরিমান চিহ্নও থাকবেনা। 
উল্লেখ্য যে সেই আলিফ নামক দেশটির পুর্ন নাম হলো "অ্যামেরিকা"।
শাহ নেয়ামতউল্লাহ (র) তার ক্বাসিদাহ গ্রন্থে বলেছেন যে,
“এ রনে হবে আলিফ এরুপ, পয়মাল মিশমার,
মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার”।
(ক্বাসিদাহ, প্যারা ৫২)
যে বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিলো আপন কামে
নিপাতিত সে শেষকালে নিজেই জাহান্নামে।
(ক্বাসিদাহ, প্যারা ৫৪)
অতএব বোঝা গেলো, অ্যামেরিকা নিঃচিহ্ন হয়ে যাবে।

বিশ্ব রনে কালো ধোয়ায়,
অন্ধকার থাকিবে আকাশ।
দেখিবে তখন জগৎবাসী,
দুখানের দশম বাণীর প্রকাশ।

ব্যাখ্যাঃ লেখক আস শাহরান প্রকাশ করেছেন যে, যখন ৩য় বিশ্বযুদ্ধ হবে, ঐ যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ধোয়ার কারনে আকাশ দিনের বেলায়ও অন্ধকার দেখাবে। আর মানুষ সেই দিন সূরা আদ-দুখানের ১০ নং বাণীর বাস্তবতা দেখতে পাবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
অতএব,আপনি সেই দিনের অপেক্ষা করুন, যে দিন আকাশ সুস্পষ্ট ধোয়ায় ছেয়ে যাবে!”
(সুরাঃ আদ-দুখান। আয়াতঃ ১০)

প্যারাঃ (৩৪)
সাত মাস ব্যাপি ধোয়ার আযাবে,
বিশ্ব থাকিবে লিপ্ত।
দুই-তৃতীয়াংশ মানব 
হারাইবে প্রান,
রব থাকিবেন ক্ষিপ্ত।

ব্যাখ্যাঃ এই ৩য় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাত (৭) মাস ধোয়ার কারনে পৃথিবী অর্ধ-অন্ধকার থাকিবে। হযরত মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “কিয়ামতের বড় ১০ টি আলামতের মধ্যে একটি হলো আকাশ কালো ধোয়ায় ছেয়ে যাবে”।
আর এই যুদ্ধের এই অবস্থার কারনটা হয়তো আমরা সবাই বুঝতেই পারছি যে, ২০২৫ সালে যদি এরুপ যুদ্ধ সংঘটিত হয় তাহলে নিশ্চই তা অতি আনবিক, হাইড্রোজেন, পারমাণবিক সহ সকল প্রকার শক্তিশালী যুদ্ধ অস্র ব্যবহৃত হবে। যার বিস্ফোরণের ফলশ্রুতিতে পৃথিবীর আকাশ ধোয়ায় ঘিরে যাবে। অসংখ্য অগনিত, মানব-দানব, পশুপাখি, গাছপালা মারা যাবে।ফসল উৎপাদন হবে না!
হাদিস অনুযায়ী ইমাম মাহদির প্রকাশের পূর্বে দুই (২) ধরনের মৃত্যু দেখা যাবে। 
(১) স্বেত মৃত্যু = ৩য় বিশ্বযুদ্ধের কারনে পরিবেশ নষ্ট হয়ে ১-২ বছর ফসল উৎপাদন না হওয়ার ফলে সংঘটিত দুর্ভিক্ষ (খরা) -র কারনে।
(২) লোহিত বা লাল মৃত্যু = যুদ্ধে রক্তপাতের কারনে যে মৃত্যু।

ভয়ংকর এই শাস্তির কারন,
বলে যাই আমি এক্ষণে।
নিম্নের কিছু কথা তোমরা,
রাখিও স্মরনে।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন যে, এই ৩য় বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে মানুষজাতিকে এতটা কঠিন শাস্তি কেন দেওয়া হবে? তার কিছু কারনও রয়েছে, যা তিনি প্রকাশ্যে এনেছেন।

প্যারাঃ (৩৬)
মহা সমরের পূর্বে দেখিবে,
প্রকাশ পাইবেন "মাহমুদ"।
পাশে থাকিবেন "শীন" ও "জ্যোতি",
সে প্রকৃতই রবের দূত।



ব্যাখ্যাঃ আল্লাহ বলেছেন যে, “যখন কোন জাতি পাপাচারে লিপ্ত হয়, তখন ততক্ষন পর্যন্ত আমি ধ্বংস করিনা, যতক্ষন না সেখানে আমার পক্ষ থেকে একজন সতর্ককারী না পাঠাই”।
ইতিহাসও তাই বলে। তাহলে ২০২৫ সালে যে এতটা ধ্বংসলীলা চলবে তা বর্তমানে বিশ্বের দিকে তাকালেই বুঝতে পারছি যে কেন! তাহলে নিশ্চই ধ্বংসের পূর্বেই একজন সতর্ককারীকে আল্লাহ পাঠাইবেন। তারই পরিচয় লেখক আস-শাহরান দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সেই আল্লাহ প্রদত্ত ব্যাক্তিটির পরিচয়টা হলো তিনি ইমাম আল মাহমুদ।
তার পাশে থাকবে "শীন" (সহচর বা বন্ধু)
(উল্লেখ্য যে শীন হলো তার নামের ১ম হরফ, পুরো নাম প্রকাশ হয়নি)
একটু স্মরন করনু, আগামী কথন এর (৫), (১৯),  (২০) এবং (২১) নং প্যারাগুলো। সেখানে বলা আছে "শীন" ও মীম" এর কথা। (যারা গাজওয়াতুল হিন্দেরর সেনাপতি ও নেতা) বলা আছে।  
শীন সেতো সাহেবে কিরান,
মীম এ "হাবিবুল্লাহ"। (২০)
এবং আরো বলা আছে যে,
হাবিবুল্লাহ প্রেরিত আমির,
সহচর তার সাহেবে কিরান। (২১)
অতএব, "মীম" হরফে শুরু নাম (মাহমুদ), তার উপাধি হলো হাবিবুল্লাহ। (আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রধান নেতা বা আমীর বা ইমাম এবং প্রতি শত বছরে আসা মুজাদ্দিদ বা দ্বীন সংস্কারকের এর একজন।)
শীন হরফে নামের শুরু (পুরো নাম জানা যায় নি) তার উপাধি হলো, "সাহেবে কিরান"!
তিনিই সেই গাজওয়াতুল হিন্দের সেনাপতি এবং উসমানি তরবারির ধারক-বাহক।
(তিনিও আল্লাহর মনোনিত ব্যাক্তি এবং প্রধান আমিরের সহচর বা নায়েবে আমীর বা বন্ধু।)
অর্থাৎ, এই ইমাম মাহমুদ ই হচ্ছেন হাবিবুল্লাহ এবং তার সহচর বন্ধুই হচ্ছেন সাহেবে কিরান।
তাদের দুজনের নেতৃত্বেই "গাজওয়াতুল হিন্দ" হবে। তাদের পরিচয় ২০২৫ সালের পুর্বেই প্রকাশিত হবে, ইংশাআল্লাহ। এবং তাঁর আগে থেকে ক্ষুদ্র সেনারা তাদের নীড়ে গোপনে প্রস্তুত হতে থাকবে। তাদের নাম কিছু দিনের মধ্যেই সব জায়গায় শোনা যাবে। (
ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী)

হিন্দুস্থান থেকে যদিও একজন,
জানাইবে “মাহমুদ” এর দাবি।
খোদা করিবেন সেই ভন্ডকে 
ধ্বংস,
সে হইবেনা কামিয়াবি।

ব্যাখ্যাঃ আস-শাহরান বলেছেন যে, ইমাম মাহমুদের প্রকাশের সমসাময়িক কালে ভারত থেকে একজন ভন্ড নিজেকে "ইমাম মাহমুদ" বা হাবিবুল্লাহ বলে দাবি জানাবে। কিন্তু সে কোনরুপ সফলতা পাবেনা। আল্লাহ তাকে ধ্বংস করে দিবেন।

প্যারাঃ (৩৮)
হাতে লাঠি, পাশে জ্যোতি,
সাথে সহচর "শীন"।
মাহমুদ এসে এই জমিনে,
প্রতিষ্ঠা করিবেন দ্বীন।

ব্যাখ্যাঃ এখানে ইমাম মাহমুদের কথা বলা হয়েছে। তার হাতে একটি লাঠি থাকবে। (হয়তো বিশেষ গুন সমৃদ্ধ)। পাশে জ্যোতি থাকবে (হয়তো জ্যোতি বলতে, আলো বা জ্ঞান বোঝানো হয়েছে বা অন্য কিছু।আল্লাহ জানেন)। এবং সাথে থাকবে সহচর শীন (সাহেবে কিরান)!
আর মাহমুদ পরিশেষে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবেন। (গাজওয়াতুল হিন্দের মধ্য দিয়ে)

প্যারাঃ (৩৯)
"সত্য"-সহ করিবেন আগমন 
তবুও করিবে অস্বিকার।
হক্বের উপর করবে বাতিল,
কঠিন অন্যায়-অবিচার।

ব্যাখ্যাঃ আস শাহরান বলেছেন যে, ঐ ইমাম মাহমুদ সত্য সহ আগমন করবেন। তবুও তাকে অস্বিকার করবে অধিকাংশ মানুষ। আর সেই হ্বক পন্থিদের উপর বাতিলপন্থি খুবই অন্যায়-অবিচার করবে।

প্যারাঃ (৪০)
অবিশ্বাসী জাতির উপর 
গজব নাজিল হবে তখন,
পচিশ সনের মহা সমরে,
ধোয়ার আযাব আসিবে যখন।

ব্যাখ্যাঃ আমরা কুরআনে বর্নিত ইতিহাসে পাই যে,
হযরত সালেহ (আ) কে অবিশ্বাস করায়, সামুদ জাতি ধ্বংস হয়েছিল।
হযরত হুদ (আ) কে অবিশ্বাস করায়, আদ জাতি ধ্বংস হয়েছিল।
হযরত লূত (আ) কে না মানায়, তার জাতি ধ্বংস হয়েছিল।
হযরত নূহ (আ) কে না মানার কারনে গোটা পৃথিবীর উপর প্লাবনের আযাব এসেছিলো।
তারই ধারাবাহিকতায়,
ইমাম মাহমুদকে অবিশ্বাস ও অস্বীকার, অবিচার, অত্যাচার করার কারনে ২০২৫ সালে এই আযাব নাজিল হবে তা হলো সেই ৩য় বিশ্ব যুদ্ধ।

লিখে রাখা আছে খুজে দেখো
তবে, মহানবীর (ছাঃ) পূথিতে।
আধুনিকতার হইবে 
ধ্বংস,পৃথিবী ফিরে যাবে অতিতে।

ব্যাখ্যাঃ এই অংশে বলা হয়েছে যে, হাদিস শরিফে বলা আছে যে, “পৃথিবী আধুনিকতায় পৌছাবে। অতপর, তা আবার ধ্বংস হবে। পৃথিবী আবার প্রাচিন যুগে ফেরত যাবে”। সুতরাং, এই ২০২৫ সালের ৩য় বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমেই তা হবে।

প্যারাঃ (৪২)
থাকবেনা আর আকাশ মিডিয়া,
থাকবেনা আনবিক অস্র।
ফিরে পাবে ফের, ইতিহাস দৃশ্য,
ঘোড়া-তরবারির চিত্র।

ব্যাখ্যাঃ এখানে লেখক বলেছেন যে, ২০২৫ সালের পর, আকাশ মিডিয়া (টিভি, রেডিও, টেলিফোন, কৃত্তিম উপগ্রহ) কিছুই থাকবেনা। আনবিক, পারমানবিক বা আধুনিক কোন অস্র থাকবে না। পুনরায় ইতিহাস দৃশ্য চলে আসবে। ঘোড়া তরবারির ব্যবহার শুরু হবে। এটি সেই ১৪৫০ বছর আগের মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বলা ভবিষ্যৎবাণীর বাস্তবায়ন।

প্যারাঃ (৪৩)
গায়েবি ধ্বনির যন্ত্র ধ্বংস,
নিকটই হবে দুর।
প্রাচ্যে বসে শুনবেনা আর,
প্রতিচির গান সুর।

ব্যাখ্যাঃ আস শাহরান বলেছেন যে, গায়েবি ধ্বনির যন্ত্র (টেলিফোন, টেলিভিশন, রেডিও, সাউন্ড সিস্টেম) সবকিছু চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা এখন বহুদুরের রাস্তা দ্রুতই পার করি, কিন্তু তখন কাছের রাস্তাকেই  দুরের মনে হবে। কারন, ২০২৫ সালের পর দ্রুতগামী যানবাহন থাকবেনা। এবং পৃথিবীর এক প্রান্তে বসে বসে আর অন্য প্রান্তের গান-সুর আর শোনা যাবে না।

সৃষ্টির উপর হাত খেলানোর,
করেছো দুঃসাহসিকতা।
শাস্তি তোমাদের পেতেই হবে,
তাইতো এই বিধ্বংস্ততা।

ব্যাখ্যাঃ এখানে বলা হয়েছে যে, ২০২৫ সালের গজব নাজিল হবার আরও একটি বড় কারন হলো, মানুষ আল্লাহর সৃষ্টির উপর হাত খেলিয়েছে। (যেমনঃ অত্যাধুনিক রোবট, টেষ্টটিউব বেবি, জেন্ডার চেঞ্জ, প্লাস্টিক সার্জারি, হাইব্রিড উদ্ভিদ ও প্রানী সহ সৃষ্টির নানাবিধ পরিবর্তন ইত্যাদি)

প্যারাঃ (৪৫)
বাংলায় তোমরা করেছো পূজা,
মুশরিকি "বা’আল" দেবতার।
মুসলিম হয়েও কেন তোমরা,
হারাচ্ছো নিজেদের অধিকার?

ব্যাখ্যাঃ এখানে লেখক বুঝিয়েছেন যে, ২০২৫ সালের পূর্বেই বাংলার ভুমিতে, বা’আল দেবতার পুজা করা হবে বা এখনও হচ্ছে।
(উল্লেখ্য যে, হযরত ইলিয়াস (আ), আল-ইয়াছা (আ), যুলকিফল (আ) এবং হযরত মিকাইয়া (আ), ইয়াছিন (আ), হযরত আর (আ), সহ অসংখ্য নবি-রছুল গন, বর্তমান ফিলিস্থান, সিরিয়া সহ আশ পাশে বা’আল দেবতার পূজার বিরুদ্ধে আগমন করেছিলেন। কারন, বা’আল দেবতার রাজত্ব চলতো সেসব অঞ্চলে।)
এখানে বা’আল দেবতা বলতে হয়তো, পূর্বপুরুষের বা ব্যাক্তিপূজাকে বুঝিয়েছে, যেগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল করে থাকে।


প্যারাঃ (৪৬)
আধুনিকতার কারনে মানুষ,
লিপ্ত নগ্নতা-অশ্লীলতায়।
বে পর্দা নারী, মূর্খ আলেম তাইতো-
পচিশে 
ধ্বংস হবে সব অন্যায়।

ব্যাখ্যাঃ এই পর্বের ব্যাখ্যা হয়তো বোঝানোর অপেক্ষা রাখেনা। আধুনিকতার জন্য মানুষ যে কতটা নগ্নতা আর অশ্লিলতায় ডুবে যাচ্ছে তা সবাই জানেন। আর দুইটি বড় কারন হলো,
১ বেপর্দা নারীর সংখ্যা ক্রমসোই বৃদ্ধি থেকে বৃদ্ধিতর হতেই আছে।
২ মূর্খ আলেমের অভাব নেই। যারা ভ্রান্ত ফতোয়াবাজী, পেট পূজারী, ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী।
এই সকল কারনের সমষ্টিতেই ২০২৫ সালে আযাব, গজব নাজিল হবে।

আকাশে আলামত; জন্ম হলো,দ্বিতীয় আবু সুফিয়ান।
চল্লিশ বছরে প্রকাশ পাবে,
দুটি শক্তিতে সে বলিয়ান।

ব্যাখ্যাঃ এখানে লেখক, মুহাম্মাদ (ছা)- এর হাদিছ থেকে কথা বলেছেন। হাদিছে বলা আছে, 
ইমাম মাহদীর প্রকাশের পূর্বে দ্বিতীয় আবু সুফিয়ানির প্রকাশ ঘটবে। দ্বিতীয় আবু সুফিয়ানের জন্মের সময় আকাশে আলামত দেখা যাবে। সে দুইটি শক্তির চাদর গায়ে (২টি শক্তিশালী দল) থাকবে”।
আমাদের নিকটবর্তী সময়ে আকাশে আলামত বলতে হেলির ধুমকেতু ১৯৮৬ সালে দেখা গিয়েছিলো। আর "আগামী কথন" এ লেখক বলেছেন ৩য় বিশ্ব যুদ্ধের পর অর্থাৎ, ২০২৫ সালের পর। ৪০ বছর বয়সে সুফিয়ানের প্রকাশ ঘটবে।
 ১৯৮৬+৪০=২০২৬ সাল। অতএব, ২০২৬ সালেই দ্বিতীয় আবু সুফিয়ানের প্রকাশ হবে। যা ইমাম মাহদির আগমনকে ইঙ্গিত করে।

প্যারাঃ (৪৮)
মহাযুদ্ধের দু সনের মাঝেই
ভয়ংকরি এক তান্ডবে।
মুসলিমদের উপর আক্রমনে,
সুফিয়ানির জয় হবে বাগদাদে।

ব্যাখ্যাঃ বলা হয়েছে যে, ২০২৫ সাল থেকে ২ বছরের মধ্যেই আবু সুফিয়ান বাগদাদের মুসলিমদের উপর বিরাট একটি আক্রমন চালাবে। সেখানে মুসলমানেরা পরাজিত হবে। আবু সুফিয়ানের বিজয় হবে।

প্যারাঃ (৪৯)
সিরিয়াবাসী আবু সুফিয়ান,
তারপর হবে একটু স্থির।
কালো পতাকাধারী পূর্বের সেনারা,
জমাইবে আরবে ভীড়।

ব্যাখ্যাঃ বলা হয়েছে, সিরিয়াবাসী আবু সুফিয়ান বাগদাদে জয় লাভের পর স্থির হয়ে থাকবে। তারপরই মহাযুদ্ধের ২ বছর পর ২০২৭-২৮ সালের দিকে হাদিসের সেই বিখ্যাত ভবিষ্যৎবাণীর বাস্তবতাটা প্রকাশিত হবে। কালোপতাকাধারী সেনারা আরবে প্রবেশ করবে। ইমাম মাহদির সাহায্যে।

প্যারাঃ (৫০)
আরবে তখনও চলিবে তিনজন,
সার্থলোভি নেতার লড়াই।
আল্লাহর দ্বীন ভুলে গিয়ে তারা,
দেখাবে ক্ষমতার বড়াই।

ব্যাখ্যাঃ আরবে একজন খলিফার তিনজন পুত্র ক্ষমতার লোভে লড়াই করতে থাকবে। তারা কেউই সঠিক আকিদার নয়, শয়তান। যা ছহিহ হাদিছেও উল্লেখিত আছে।
তাহলে কি তখনই প্রকৃত "ইমাম মাহদির আগমনের সময়"?

আধুনিকতার অধ্বঃপতনের,
তৃতীয় বর্ষপর।
আঠাশে প্রকাশ পাইবেন "মাহদী",
এই দুনিয়ার ঊপর।

ব্যাখ্যাঃ একটি চিরাচরিত নাম ইমাম মাহদী। একজন প্রকৃত মুসলিম উম্মাহ হিসেবে, আপনার কাছে এই নামটিতে মিশ্রিত রয়েছে "শত আশা, আকাঙ্খা, সুখ-শান্তির বাতাস, অপেক্ষা। সবার একটাই প্রশ্ন? কবে ইমাম মাহদীর আগমন ঘটবে?? 
সবার সেই জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে, আগামী কথন এর লেখক (আস-শাহরান) প্রকাশ করলেন যে (আল্লাহ প্রদত্ত এই ইলহামি ভবিৎষতদ্বানী অনুযায়ী) যখন,কাশ্মীর বিজয় হবে, তার ২ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে হিন্দুস্থানিরা "দ্বিতীয় কারবালা" করবে, সে সময় ইমাম মাহমুদ (হাবিবুল্লাহ) ও তার বন্ধু বা সহচর শীন (সাহেবে কিরান) এদের প্রকাশ ঘটবে।
তাদের নেতৃত্বে "গাজওয়াতুল হিন্দ" হবে। ২০২৫ সালে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ হবে। যার ফলে আধুনিকতা চিরতরে ধ্বংস হবে।
এরই তিন বছরের মাথায় অর্থাৎ, ২০২৮ সালে ইমাম মাহদীর প্রকাশ ঘটবে।

বন্ধুরা, আমি ব্যাক্তিগত ভাবে আখিরুজ্জামান নিয়ে যতটুকু চর্চা করেছি, তার অভিঙ্গতার আলোকে লেখক আস-শাহরান -এর আগামী কথন এর সত্যতা যাচাই করিঃ

ইমাম মাহদীর আত্নপ্রকাশ কবে হবে? এই বিষয়টি নিয়ে প্রত্যেকটি যুগেই চলছে ভবিষ্যৎ বানী। যদিও নির্দিষ্ট সময় আল্লাহ ছাড়া আর কেউই জানে না। তারপরও কেবল মাত্র সতর্কতার জন্য ইমাম মাহদীর আগমনের কাছাকাছি একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়ে একটু লিখতে চাই। কারন অনেকে হাদীসের সঠিক ব্যাখ্যা ও বর্তমান পৃথিবীর সত্য সংবাদগুলো না জানার কারণে মনে করছেন ইমাম মাহদীর আগমন আরো শতশত বছর পরে হবে। অপরদিকে কিছু ভাই মনে করছেন ২০২৩ সালের মধ্যেই ইমাম মাহদীর আগমন হবে। যদিও এর কোনটাই সঠিক নয়। বরং বর্তমানে ইমাম মাহদীর আত্নপ্রকাশের অধিকাংশ আলামত এই সময়টির সাথে মিলে যাচ্ছে। তবে এখনও কিছু আলামত বাস্তবায়ন বাকী রয়েছে। তাই কেউ আমার এই লেখাটিকে একমাত্র দলিল হিসেবে নির্ভরশীল হবেন না। কারণ আমার গবেষণা ভূলও হতে পারে”।

১। তুর্কি খিলাফত ধ্বংসঃ
হযরত আবু কুবাইল (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন ১০৪ বছর পর মাহদী (আঃ) উপর মানুষ ভিড় করবে। ইবনে লাহইয়া বলেন, উক্ত হিসাবটা আজমী তথা অনারবী হিসাব মতে। আরবী হিসাব মতে নয়।
(আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৬২)
আমরা সবাই জানি যে, তুর্কি খিলাফত আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৯২৪ সালে বিলুপ্ত করা হয়েছিল। সুতরাং, ১৯২৪ +১০৪ =২০২৮ সাল।
বিঃদ্রঃ- একমাত্র তুর্কি খিলাফত আজমী, অর্থাৎ অনরবী। এছাড়া চার খলিফা, উমাইয়া খিলাফত, আব্বাসীয় খিলাফত, ফাতেমীয় খিলাফত সবগুলোই আরবদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত।

২। ১৫ ই শুক্রবার রাতে রমজান মাসে বিকট শব্দে আওয়াজ আসবেঃ
ফিরোজ দায়লামি বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “কোন এক রমজানে আওয়াজ আসবে”। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! রমজানের শুরুতে? নাকি মাঝামাঝি সময়ে? নাকি শেষ দিকে’? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,“না, বরং রমজানের মাঝামাঝি সময়ে। ঠিক মধ্য রমজানের রাতে। শুক্রবার রাতে আকাশ থেকে একটি শব্দ আসবে। সেই শব্দের প্রচণ্ডতায় সত্তর হাজার মানুষ সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলবে আর সত্তর হাজার বধির হয়ে যাবে”।
(মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩১০)
সৌদি আরবের কেলেন্ডার অনুযায়ী ১৫ ই রমজান শুক্রবার হয়, ১৪৪৯ হিজরী বা, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৮ সাল।

৩। রমজান মাস শুরু হবে শুক্রবারঃ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্নিত, তিনি বলেন, কোন এক রমজানে অনেক ভূমিকম্প হবে। যে বছর শুক্রবার রাতে রমজান মাস শুরু হয়। তারপর মধ্য রমজানে ফজরের নামাজের পর আকাশ থেকে বিকট শব্দে আওয়াজ আসবে। তখন তোমরা সবাই ঘরের দরজা, জানালা সব বন্ধ করে রাখবে। আর সবাই সোবহানাল কুদ্দুস, সোবহানাল কুদ্দুস, রাব্বুনাল কুদ্দুস তেলাওয়াত করবে।
(আল ফিতানঃ নুয়াইম বিন হাম্মাদ, হাদিস নং – ৬৩৮)
সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১ রমজান শুক্রবার ১৪৪৯ হিজরী বা ২৮ জানুয়ারি ২০২৮ সাল হয়।
(বিঃদ্রঃ হাদিস বড় হওয়ার কারনে সম্পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হয়নি, তবে কিতাবুল ফিতানের হাদীসে শুক্রবার রমজান মাস শুরু হবে এরকম বর্ননা নেই।)

৪। আশুরা বা, ১০ মুহাররম শনিবার হবেঃ
ইমাম বাকির (রহঃ) বলেন, যদি দেখ আশুরার দিন বা, ১০ মুহাররম শনিবার ইমাম কায়িম (মাহদী) আঃ মাকামে ইব্রাহিম ও কাবার এর মধ্যখানে দাড়িয়ে থাকেন তখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার পাশেই দাড়িয়ে থাকবেন এবং মানুষকে ডাকবেন তাকে বাইয়াত দেয়ার জন্য।
(বিহারুল আনোয়ার, ভলিউম ৫২ পৃষ্ঠা - ২৭০) 
(গাইবাত, লেখকঃ শাইখ আত তুসী, পৃষ্ঠা - ২৭৪)
(কাশফ উল গাম্মাহ, ভলিউম ৩, পৃষ্ঠা - ২৫২)
সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ মুহাররম শনিবার ১৪৫০ হিজরী বা, ৩ জুন ২০২৮ সাল হয়।

৫। ইমাম মাহদীর নাম ধরে হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর আহ্বানঃ
হযরত আবু বাছির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু আব্দুল্লাহ আস সাদিক (হযরত জাফর সাদিক রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম? কখন আল কায়েম (ইমাম মাহদী) আবির্ভাব হবে? তিনি বললেন আহলে বাইতের (রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বংশধর) জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় (উল্লেখ) নেই। তবে ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে ৫টি বিষয় ঘটবে। যেমনঃ
১। আকাশ থেকে আহ্বান।
২। সুফিয়ানীর উত্থান।
৩। খোরাসানের বাহিনীর আত্নপ্রকাশ।
৪। নিরপরাধ মানুষকে ব্যাপকহারে হত্যা করা।
৫। (বাইদার প্রান্তে) মরুভূমিতে একটি বিশাল বাহিনী ধ্বংসে যাবে।
ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে দুই ধরনের মৃত্যু দেখা যাবে।
১। শ্বেত মৃত্যু।
২। লাল মৃত্যু।
শ্বেত মৃত্যু (দুর্ভিক্ষের কারনে মৃত্যু) হল মহান মৃত্যু। আর লাল মৃত্যু হল তরবারি (যুদ্ধের) কারনে মৃত্যু। আর আকাশ থেকে তিনি (হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার (ইমাম মাহদীর) নাম ধরে আহ্বান করবে ২৩ ই রমজান শুক্রবার রাতে।
(হাদিস বড় হওয়ায় সম্পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হয়নি)
(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড - ৫২, পৃষ্ঠা - ১১৯, বিশারাতুল ইসলাম, পৃষ্ঠা - ১৫০, মুন্তাখাবুল আসার, পৃষ্ঠা - ৪২৫, মুজ'আম আল হাদিস আল ইমাম আল মাহদী, খন্ড - ৩, পৃষ্ঠা - ৪৭২)
সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২২ রমজান শুক্রবার (যেহেতু আরবী মাস সন্ধ্যা থেকে হিসাব করতে হয়, তাই শুক্রবার রাত ২৩ ই রমজান হবে) রাত ১৪৪৯ হিজরী বা ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৮ সাল হয়।

৬। রমজান মাসে চন্দ্র গ্রহন ও সূর্য গ্রহন হবেঃ
মুহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে আল হানাফিয়্যাহ বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী থেকে দুটি বিষয় না ঘটবে, ততদিন পর্যন্ত মাহদী আগমন হবে না। প্রথমটি হল, রমজানের প্রথম রাতে চন্দ্র গ্রহণ ও মধ্য রমজানে সূর্য গ্রহন না ঘটে।
(ইমাম আল আলী বিন উমর আল দারাকতুনী)
(আল কাউলুল মুখতাসার ফি আলামাতিল মাহদী আল মুন্তাজার, লেখকঃ- ইবনে হাজার আল হাইতামী, পৃষ্ঠা-৪৭)
১ রমজান রবিবার ১৪৪৮ হিজরী বা ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৭ সালে সূর্য গ্রহন ঘটবে। এবং
১৪ রমজান শনিবার ১৪৪৮ হিজরী বা ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৭ চন্দ্র গ্রহণ ঘটবে। 
(সূত্রঃ Wikipedia)
বিঃদ্রঃ ২০২৬ সালেও রমজান মাসে দুই বার চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য গ্রহন হবে।

৭। বিখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা (রাঃ) এর উক্তিঃ
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ১৪০০ হিজরীর পর ২ দশক বা ৩ দশক পর ইমাম মাহদীর আগমন হবে।
(আসমাউল মাসালিক লিইয়াম মাহদিয়্যাহ মাসালিক লি কুল্লিদ দুনিইয়া বি আমরিল্লাহীল মালিকঃ লেখক- কালদা বিন জায়েদ, পৃষ্ঠা- ২১৬)
সুতরাং ১৪০০+২০+৩০ =১৪৫০ হিজরী বা, ২০২৮ সাল। 

৮। শাহ নিয়ামত উল্লাহ (রহঃ) এর কাসিদাহঃ
শাহ নিয়ামত উল্লাহ (রহঃ) এর কাসিদাহ মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভবিষ্যৎবাণী করা একটি ইলহামী কবিতা। কাসিদাহ লেখা হয়েছে ১১৫৮ সালে। কাসিদাহ এর (প্যারা-৫৭) বলা হয়েছে,
‘কানা জাহুকার’ প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত (ইমাম মাহাদি) দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত।
উল্লেখ যে, 'কানা জাহুকা' শব্দটি পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা বানি ঈসরাইলের ৮১ নং আয়াতে রয়েছে। এবং আমরা জানি যে, উপমহাদেশ ভারত ও পাকিস্তান নামে ভাগ হয়েছিল, ১৯৪৭ সালে।
সুতরাং, ১৯৪৭ +৮১ =২০২৮ সাল।
মাহদির প্রকাশের জন্য রমজানের ১ম ও ১৫তম তারিখ শুক্রবার হতে হবে।
২০২০ সালের রমজান মাসে তা মিলে যায়, অন্য কোন সালে নয়।
এরপর, ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত আর কোন রমজানেই তা মিলবে না এবং এরপর, ২০২৮ সালের রমজানের ১ম ও ১৫ তারিখ শুক্রবার হয়। তাহলে বোঝা গেলো, এখন ২০২০ সালে যদি মাহদি না প্রকাশ হয়, তাহলে ২০২৮ এর আগে আর হবেনা।
এখন কথা হলো, উপরক্ত যত আলামত তা ২০২৮ সালের পক্ষে। এবং মাহদির পুর্বে যা কিছু ঘটনা ঘটবে যেমনঃ
·       ফুরাত নদীর সোনার পাহাড় প্রকাশ হবে।
·       পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশি মানুষ মারা যাবে। তিন ভাগের দুই ভাগ।
·       শ্বেত মৃত্যু হবে।
·       লোহিত বা লাল মৃত্যু হবে।
·       এক বছরের খাদ্য সংগৃহিত করতে হবে।
·       ইমাম মাহমুদ হাবিবুল্লাহ এবং সাহেবে কিরানের আত্মপ্রকাশ পাবে।
·       গাজওয়াতুল হিন্দ হতে হবে।
·       আবু সুফিয়ানের প্রকাশ হবে।

এখন বলুন, ২০২০ সালের রমজানের পুর্বে এই সকল ঘটনা কেমন করে ঘটবে?
অসম্ভব। তাই ২০২৮ সালে হবার সম্ভবনা শতভাগ সঠিক। আল্লাহু আলাম।
বন্ধুরা এ রকম আরো বহু সুত্রের যোগ ফল দেখলাম ২০২৮ সাল।
যা লেখক "আস-শাহরান" এর আগামী কথন এর বলা এই বাণীকে সত্য বলে মেনে নিতে বাধ্য করে। (ইংশাআল্লাহ হবে, বাকিটা আল্লাহই ভালো জানেন)

প্যারাঃ (৫২)
শত অপেক্ষার অবসাণ ঘটিয়ে,
ইমাম মাহদির হবে আগমন।
দুঃখ দুর্দশা হবে দুর, শান্তিতে
ভরে যাবে এ ভুবন।

ব্যাখ্যাঃ লেখক (আস-শাহরান) বলেছেন যে, শত অপেক্ষার অবশান ঘটিয়ে ২০২৮ সালে ইমাম মাহদির আগমন হবে। আর আমরা তো সবাই অবগত আছিই যে, তার আগমন মানেই, সকল দুঃখ,দুর্দশা দুর হয়ে যাবে। পৃথিবী সুখ শান্তি ও ন্যায় ইনসাফে ভরে যাবে ঠিক যেমনটি অন্যায় দ্বারা ভরা ছিলো।

প্যারাঃ (৫৩)
শুনে রাখো তোমরা বিশ্ববাসী,
মাহদির দেখা পেলে,
তার পাশেই রবে রবের রহমত,
শুয়াইব ইবনে ছালেহ।

ব্যাখ্যাঃ এখানে, লেখক আস-শাহরান প্রকাশ করেছেন যে, যখনি বিশ্ববাসী ইমাম মাহদিকে পেয়ে যাবে তখন তারা ইমাম মাহদির পাশে তার সহচর বা বন্ধু "শুয়াইব ইবনে ছালেহ" কেও পাবে।
উল্লেখ্য যে, লেখক আস-শাহরান তাকে "রবের রহমত" বলে আক্ষায়িত করেছে। অতএব বুঝতেই পারছি, তার মর্যাদা রয়েছে। সেও আল্লাহর মনোনীত বান্দা।
(যেমনঃ হযরত মুহাম্মাদ (ছ) ও আবু বকর (রাঃ), ইমাম মাহমুদ হাবিবুল্লাহ (দাঃবাঃ) ও শীন সাহেবে কিরান (দাঃবাঃ) এদের অনুরুপ)

প্যারাঃ (৫৪)
কালো পতাকাধারী "মাহমুদ" সেনারা,
মাহদী-র হাতে নিবে শপথ।
আরবে করিবে ঘোরতর রণ,
অতঃপর আনিবে আলোর পথ।

ব্যাখ্যাঃ এখানে লেখক প্রকাশ করলেন যে, যে সৈনিকরা খোড়াসান থেকে প্রকাশ পাবে এবং আরবে ইমাম মাহদির সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে এবং ঘোরতর যুদ্ধ করবে। আগামী কথনে প্রকাশ করা হয়েছে ঐ সৈনিকগন হবে "ইমাম আল-মাহমুদ" হাবিবুল্লাহ -এর সৈনিক। তারা ইমাম মাহমুদ হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বেই আরবে প্রবেশ করবে। প্রবেশ করেই ইমাম মাহমুদ ও তার সৈন্যগন, সবাই মাহদির আনুগত্যের শপথ করবে। তারপর, আরবে যুদ্ধ করবে এবং ঐ যুদ্ধে সফলতা পাবে। এবং, ইমাম মাহদির পরিচয়টা সেখানে প্রকাশিত হবে।

প্যারাঃ (৫৫)
মধ্য রমজানের ভোরের আকাশে,
জিব্রাইল দেবেন ভাষণ।
প্রকাশ পাবেন, ক্ষমতায় যাবেন,
"মাহদী " করবেন বিশ্ব শাষন।

ব্যাখ্যাঃ যে বছর ইমাম মাহদী প্রকাশিত হবে ঐ বছর ১৫ ই রমজান শুক্রবার (বৃহস্প্রতি বার দিবাগত রাতে) ভোর রাতে আকাশ থেকে বিকট কন্ঠে আওয়াজ আসবে। আর তা হবে জিব্রাইলের কন্ঠ। (যদিও তার পরপরই আরও একটি আওয়াজ শয়তান দিবে)
(এই ঘটনাটি হাদিছেও বর্নিত আছে।)
অতঃপর, ইমাম মাহদী ঐ বছরই প্রকাশ পাবে, তার পরের বছরই ক্ষমতায় যাবেন।

প্যারাঃ (৫৬)
মাকামে ইব্রাহিম ও কাবা গৃহ,
এ দুয়ের মধ্যখানে,
মাহদির সত্যায়ন দিবেন জিব্রাইল,
প্রকাশ্য মজলিসে দিবালোকে।

ব্যাখ্যাঃ যখন ইমাম মাহদির প্রকাশ ঘটবে, কাবাগৃহ ও মাকামে ইব্রাহিমের মাঝখানে তখন জিব্রাইল (আঃ) ফেরেস্তা প্রকাশ্যে ইমাম মাহদির পাশে দাড়িয়ে তার সত্যতার কথা ভাষন দিবে।

প্যারাঃ(৫৭)
সেই মজলিসে ইমাম মাহমুদ কে,
খোদা সম্মান দান করিবেন।
রহস্য উদ্ঘাটনের সেই দৃশ্য,
সবাই স্বচক্ষে দেখিতে পাইবেন।

ব্যাখ্যাঃ লেখক আস-শাহরান ভবিৎষতদ্বানী তে বলেছেন যে, মজলিসে জিব্রাইল (আঃ) ফেরেস্তা প্রকাশ্যে মাহদির পাশে থাকবেন এবং ঐ মজলিসে ইমাম মাহদির পাশে ইমাম মাহমুদ কেও কোন একটা সম্মানী দান করবেন

প্যারাঃ (৫৮)
আক্রমন করিতে আসিবে মাহদিকে,
অসংখ্য সেনা সহ সুফিয়ান।
বায়দাহ নামক প্রান্তরে এসে,
ধ্বসে যাবে সাত হাজার তিনশ প্রান।

ব্যাখ্যাঃ হাদিছ শরিফে বর্নিত আছে, ইমাম মাহদি কে হত্যা করার তাগিদে শাম দেশ (সিরিয়া) থেকে একদল সৈন্য প্রেরিত হবে। তারা যখন মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী বায়দাহ নামক স্থানে আসবে তখন ভুমি ধ্বসের ফলে সবাই প্রান হারাবে
উল্লেখ্য যে,আস-শাহরান আগামী কথনে বলেছেন, ঐ সেনা দলটি দ্বিতীয় আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে চলবে। আর ভুমি ধ্বসের ফলে ৭ হাজার ৩০০ মানুষ প্রান হারাবে

প্যারাঃ (৫৯)
যদিও সে স্থানে ভুমি ধ্বসের ফলে, 
হারাইবে সকলেই প্রান।
খোদার কুদরত; বেচে রবে শুধু,দ্বিতীয় আবু সুফিয়ান।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন যে, ভুমি ধ্বসের কারনে ঐ স্থানের সবাই প্রান হারালেও খোদার কুদরতে শুধু মাত্র আবু সুফিয়ানই বেচে রবে।

প্যারাঃ (৬০)
প্রান ভিক্ষা পেয়ে আবু সুফিয়ান,
মাহদির প্রচারনা চালাবে,
অবশেষে সে 
ঈমান হারা হয়ে,
মৃত্যু বরন করিবে।

ব্যাখ্যাঃ যখন ভুমি ধ্বসের পর সুফিয়ান কেবল নিজেকেই জীবিত দেখতে পাবে, তখন ভয় ভিতিতে দৌড়াতে থাকবে আর বলতে থাকবে,
“ইমাম মাহদি এসে গেছে। ইমাম মাহদি এসে গেছে”।
তবে সে ঈমান আনবে না। যার ফলে, পরবর্তীতে ঈমান হারা অবস্থায় মৃত্যু বরন করবে।

প্যারাঃ (৬১)
সমগ্র বিশ্বের রাষ্ট্র প্রধানরা,
মাহদির হাতে নেবে শপথ।
বাদশাহি পাবে ইমাম মুহাম্মাদ,
পৃথিবী কে দেখাবেন সুপথ।

ব্যাখ্যাঃ সারা বিশ্বের রাষ্ট্র নেতারা ইমাম মাহদির হাতে শপথ গ্রহন করবে এবং মাহদি কে বিশ্ব বাদশাহ হিসেবে গ্রহন করে নিবে। তখন ইমাম মাহদি পৃথিবী কে সুপথগামী করবেন।

প্যারাঃ (৬২)
ফলমুল, শস্যদানা ও উদ্ভিদমালার,
বহুগুনে হবে উৎপাদন।
আল্লাহুর খাছ রহমত পেয়ে,
শান্তিতে রবে জনগন।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন, ইমাম মাহদির সময় কালে প্রচুর ফলমুল, শস্যদানার উৎপাদন হবে। কেউ কষ্টে রবেনা।
মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরিয়ত অনুযায়ী পৃথিবী চলবে। কোন অভাব থাকবেনা। যা হাদিসের বাণীকে সত্য প্রমানিত করে। (আলহামদুলিল্লাহ)

রবের চারটি দূত তখন,
থাকিবে দুনিয়ার উপর।
"মীম" ও "মীম" দুইটি আমীর,
"শীন" ও "শীন" তাদের সহচর।
ব্যাখ্যাঃ আস-শাহরান প্রকাশ করেছেন চারজন রবের প্রেরিত বান্দা থাকবে একসাথে। তাদের ৪ জনের মধ্যে ২ জন আমীর। আর ২ জন তাদের ২ জনের সহচর।
আমির ২ জনের নাম "মীম" হরফে। এবং সহচর ২ জনের নাম "শীন" হরফে।
যথাঃ
১। "মীম" = মুহাম্মাদ(মাহদী) "আমীর ও খলীফা"।
২। "শীন" = শুয়াইব(সহচর)।
৩। "মীম" = ইমাম মাহমুদ(আমীর)।
৪। "শীন" = সাহেবে কিরান(সহচর)

প্যারাঃ (৬৪)
বাদশাহী পেয়ে বিশ্বনেতা,
সাত থেকে নয় বছরের পর।
ভারপ্রাপ্ত করিবে খেলাফত,
মাহদী, মাহমুদ এর উপর।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন, ইমাম মাহদী তার বিশ্ব শাষন ভার সাত থেকে নয় বছরের মধ্যেই হঠাৎ ত্যাগ করবেন। আর তখন বিশ্ব শাষন ভার ভারপ্রাপ্ত হবে ইমাম মাহমুদের উপর। বোঝা যায়, ইমাম মাহমুদের সম্মান তাহলে অনেক। ইমাম মাহদির পরেই তার সম্মান।
উল্লেখ্য যে, কুরাইশ বংশ থেকে, যে ১২ জন ইমাম/আমীরের আগমনের কথা হাদিছে বলা আছে, তার ই শেষ/১২ নং ইমাম হলেন ইমাম মাহদী। আর তার নিচের পর্যায়ের ১১ নং ইমামই হলেন ইমাম মাহমুদ। (আগামী কথন থেকে প্রমান মেলে)

দু সনের মধ্যেই ইমাম মাহমুদ,
বিশ্ব শাষন ভার।
হস্তান্তর করিবেন খেলাফত,
“মুনসুরের” উপর।

ব্যাখ্যাঃ ইমাম মাহদির পর, যখন ইমাম মাহমুদ বিশ্ব শাষন করবে। তার খেলাফতের দুই (২) বছরের মধ্যেই বিশ্বশাষন ভার ত্যাগ করবেন। আর ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন "মুনসুর" নামক একজন ব্যক্তির উপর। কারন সে ব্যক্তিটি আল্লাহর মনোনীতই হবে। কেননা এই মনসুরের নামটি কিছু হাদিছেও প্রকাশিত আছে। আবু দাউদ শরীফে একটি বর্ণনামুলক হাদিস আছে মুনসূর নাম সহ, জঈফ হলেও এর সাথে মিলে যায়।

প্যারাঃ (৬৬)
কাহতান বংশীয়, লাঠি হাতে,
বড় কপাল বিশিষ্ঠ।
বিশ্ব শাষন করিবেন মুনসুর,
থাকিবে শত্রুর উপর ক্ষিপ্ত।

ব্যাখ্যাঃ লেখক (আস-শাহরান) বলেছেন যে, সেই মুনসুর কাহতান গোত্র থেকে জন্ম নিবে। (উল্লেখ্য যে, কাহতান গোত্রটি কুরাইশ বংশেরই একটি গোত্র)
তার হাতে একটি লাঠি থাকবে। তার কপাল বড় হবে।
(হাদিছে পাওয়া যায় যে, তার গায়ের রং শ্যামবর্নের হবে, আর কান ছিদ্র হবে। সে ইমাম মাহদির সময় তার পাশে থেকে তাকে খেলাফত প্রতিষ্ঠাকালেও সহযোগিতা করবে। সে ইমাম মাহদি ও ইমাম মাহমুদের প্রিয় পাত্র হবেন।)

আটত্রিশ থেকে আটান্ন সাল,
মুনসুরের শাষন কাল।
শত্রুর উপর বিজয়ী থেকে,
রবের দ্বীন রাখবে অটল।


ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন যে, মুনসুর ২০৩৮-২০৫৮ সাল এই ২০ বছর বিশ্ব শাষন করবেন। শত্রুর উপর বিজয়ী থেকে শরিয়ত প্রতিষ্ঠিত রাখবে।

প্যারাঃ (৬৮)
শাষক মুনসুরের খেলাফত শেষের
অষ্ট বর্ষ পূর্বে,
মিথ্যা 
ঈসা-র হবে দাবিদার, 
একজন পারস্য সম্রাজ্যে।

ব্যাখ্যাঃ লেখক ভবিৎষতদ্বানী করে বলেছেন যে, মুনসুর শাষকের খেলাফত শেষ হবার ৮ বছর আগে। যেহেতু ২০৫৮ সালে শাষন শেষ হবে সুতরাং, আট বছর পূর্বে ২০৫০ সালে পারশ্য সম্রাজ্য থেকে একজন ব্যাক্তি নিজেকে হযরত ঈসা (আঃ) বলে দাবি জানাবে। অথচ সে একজন মহামিথ্যুক, ভন্ড হবে।
(এ দ্বারা এটাও বোঝা যাচ্ছে যে, প্রকৃত হযরত ঈসা (আঃ) তখনও আগমন করেন নি। সুতরাং, বর্তমান বিশ্ব যে কথাটার উপর আস্থা রাখছে যে, ইমাম মাহদির সময় কালেই দাজ্জাল ও ঈসা (আঃ) আগমন করবেন, সেই কথাটা আগামী কথন সমর্থন করেনা।)
বিঃ দ্রঃ কোন হাদিছও এ কথা বলেনা যে ইমাম মাহদির সময়কালেই, দাজ্জাল ও ঈসা (আঃ) আসবেন। মূলত কিছু মূর্খ অল্প বিদ্যার আলেম (শেষ জামানার বলা সেই পথ ভ্রষ্ট আলেম বা ওলামায়ে সূ) সেই ইমামের বা আমীরের পিছনে ঈসা (আঃ) নামাজ পড়বেন বলছে যে হাদিসে, সেটিতে ইমাম বা আমীর হিসেবে ইমাম মাহদিকেই ধরে নিচ্ছেন, কিন্তু সেই ইমাম বা আমীর যে অন্যকেউ তারা তা দেখে না। যদি খলীফাদের নাম ও বৈশিষ্ট্য দেখে তাহলে তারা জানতে পারে এ বিষয়ে। এবং এটাও চির সত্য যে ঈসা (আঃ) এর পরও কোন খলীফা হবেন না।

বাতিল ধ্বংসে রবের দূত,
*জামিল* নামটি তার।
ভন্ড ঈসা কে 
ধ্বংস করার,
রব দিবেন দ্বায়িত্ব ভার।

ব্যাখ্যাঃ যখন ২০৫০ সালে পারশ্য সম্রাজ্য থেকে একজন ভন্ড মিথ্যাবাদী নিজেকে ঈসা (আঃ) বলে দাবি করবে, তখন ঐ ভন্ড ঈসা কে ধ্বংস করার জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন শুভ শক্তির আগমন ঘটবে। তার নামটি লেখক আস-শাহরান  “আগামি কথন” এ প্রকাশ করেছেন আর তার নামটি হবে জামিল (সুন্দর্যের অধিকারী)।
ভন্ড ঈসা কে 
ধ্বংস করার জন্য রব নিজেই তাকে দ্বায়িত্ব দিবেন। অর্থাৎ, সে ইলমে লাদুনির অধিকারী হবেন।

প্যারাঃ (৭০)
শত্রু নিধন করবে "জামিল"
হাতে রেখে "যুলফিকর"!
রক্ত নেশায় উঠবে মেতে,
সাথে রবে "সালমান" সহচর।

ব্যাখ্যাঃ লেখক (আস-শাহরান) বলেছেন যে, এই বীর যোদ্ধা "জামিল" যখন শত্রু নিধন করতে ময়দানে নামবে, তখন তার হাতে যুলফিকর তরবারি থাকবে (যেটা মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ব্যবহার করতেন)। সে শত্রুদের রক্তের নেশায় মেতে উঠবে এবং তার পাশে থাকবে তার সহচর বা প্রিয় বন্ধু "সালমান"।
যেহুতু সালমানের নাম তার জন্মের পূর্বেই প্রকাশিত হলো, সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে সেও আল্লাহর মনোনীত বান্দা।
(যেমনঃ ইমাম মাহদি ও শুয়াইব, ইমাম মাহমুদ ও শীন(সাহেবে কিরান) ঠিক তেমনই জামিল ও সালমান)

ভন্ড ঈসা কে ধ্বংস করিবে 
জামিল চোয়ান্ন সালে।
বীর জামিল কে জানাইবে স্বাগতম,
মুনসুর শাষকের দলে।

ব্যাখ্যাঃ দেখুন আস-শাহরান রবের সাহায্যে কতটা নিখুত ইলহামি ভবিৎষতদ্বানী দান করেছেন। তিনি বলেছেন যে, পারশ্য সম্রাজ্য থেকে ২০৫০ সালে যে, ভন্ড নিজেকে ঈসা (আঃ) বলে দাবি জানাবে, তাকে ২০৫৪ সালে জামিল যুদ্ধের ময়দানে কতল করবে। তখন সে সময়ের বাদশা "মুনসুর" জামিলের বীরত্ব, সাহসিকতা, জ্ঞানের পরিচয় পেয়ে জামিল কে তার দলে যোগদানের জন্য আহ্ববান জানাবে।

প্যারাঃ (৭২)
মুনসুর তখন বানাবে জামিল কে,
তাহার প্রধান সেনাপতি।
রবের রহমতে সে বীর যোদ্ধা,
বিশ্বে পাইবেন স্বীকৃতি।

ব্যাখ্যাঃ জামিল যখন ভন্ড ঈসা ও তার অনুসারী দেরকে হত্যা করবে, তখন তাকে বাদশা মুনসুর বিশ্বের প্রধান সেনাপতি বানাইবেন। বিশ্ববুকে জামিল বীরযোদ্ধা খেতাব পাবেন।
কারন, এই জামিল হবেন আল্লাহর বিশেষ 
মনোনীত বান্দা।

তাহার পরেই ধরণি বাসী,
আগাইবে পঞ্চান্ন সালে।
জমিনের বুকে আসিবে "জাহজাহ",
ছিলো সে চোখের আড়ালে।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন, তারপর যখন ২০৫৫ সাল আসবে তখন "জাহজাহ" নামক এক ব্যাক্তির আবির্ভাব ঘটবে। সে নাকি মানুষের চোখের আড়ালে ছিলো।
(উল্লেখ্য যে, হযরত মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কিয়ামত ততদিন পর্যন্ত হবে না যতদিন না "জাহজাহ" নামক এক আযাদকৃত কৃতদাস "বাদশাহী" না পাবে। অতএব, বোঝা গেলো, এই সেই হাদিছে বর্নিত "জাহজাহ")

প্যারাঃ (৭৪)
পূর্বে কৃতদাস ছিলেন জাহজাহ,
আযাদ দিলেন রব।
ধরণির মাঝে বন্ধ করবেন,
কোলাহলের উৎসব।

ব্যাখ্যাঃ এখানে লেখক বলেছেন, এই "জাহজাহ" পূর্বে কৃতদাস ছিলেন। তারপর আল্লাহ নিজেই তাকে আযাদ করেছেন। আর "জাহজাহ" যখন আসবে, তখন পৃথিবীতে, কোন একটা বড় কোলাহল (ইকতেলাফ/মতান্যৈক্য) থাকবে। যার অবসান ঘটাবেন এই "জাহজাহ"।
(যেহুতু, হাদিছ শরিফে জাহজাহ-র বাদশাহী পাবার পূর্ব ঘোষনা রয়েছে, সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে তিনিও আল্লাহর মনোনীত বান্দা।)

প্যারাঃ (৭৫)
ছাপ্পান্ন তে যাবেন জাহজা্‌
শাষন ক্ষমতায়।
দামেস্ক মসজিদে পাইবেন ইমামত,
সৎ চরিত্র ও সততায়।

ব্যাখ্যাঃ জাহজাহ ২০৫৬ সালে শাষন ক্ষমতায় যাবেন। তার সৎ চরিত্র ও সততার গুণে মানুষের মনে জায়গা করে নিবেন। সে দামেস্ক এর কোন এক মসজিদে ইমামতি করবেন এবং, রাজ্যপাট দেখাশোনা করবেন।
(বিঃ দ্রঃ যেহেতু বাদশাহ মুনসুর ২০৫৮ সাল পর্যন্ত শাষন চালাবে। সেহুতু ২০৫৬ সালে জাহজাহ বিশ্ব বাদশাহী পাবেনা। সে উক্ত ২ বছর দামেস্ক মসজিদ এবং উক্ত মহাদেশ শাষন করবেন।)
(আগামি কথনের ভাষ্যে)

ষাটের শেষে দাজ্জাল এসে,
দিবে বিশ্বে হানা।
আল্লাহর রছুল (ছাঃ) বলে গিয়েছেন,
তার থাকবে এক চোখ কানা।

ব্যাখ্যাঃ সেই ভয়ংকর ফিতনা "দাজ্জাল" নিয়ে আস-শাহরান এর ইলহামী ভবিৎষতদ্বানী।  ২০৬০ সালের শেষের দিকে দাজ্জালের আগমন ঘটবে। আল্লাহর রছুল (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, দাজ্জালের ১ চোখ কানা হবে। কপালে "কাফির" লেখা থাকবে।
(দাজ্জালের ব্যাপারে মোটামুটি সবাই জানি, তাই হাদিছ উল্লেখ করা হলো না)

প্যারাঃ (৭৭)
মহা মিথ্যুক দাজ্জাল তখন,
করিবে রবের দাবি।
যে জন করিবে অস্বীকার তাকে,
সেই হইবে কামিয়াবী।

ব্যাখ্যাঃ দাজ্জাল প্রকাশ পেয়ে নিজেকে রব/সৃষ্টিকর্তা বলে দাবি করবে। তখন যারা দাজ্জাল কে অস্বীকার করবে, তারাই সফলকাম হবে এবং যারা তাকে মেনে নিবে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

দাজ্জাল সেনাদের তান্ডব লিলায়,
ঘটিবে বিশ্বে বিপর্যয়।
জাহজাহ চাইবেন সবার জন্য,
রবের রহতমের আশ্রয়।

ব্যাখ্যাঃ যখন দাজ্জাল ও তার অনুসারী সৈন্যরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে, তখন বাদশা জাহজাহ আল্লাহর রহমতের আশ্রয় চাইবেন।

প্যারাঃ (৭৯)
সাদা গম্বুজের দামেস্ক মসজিদে,
জাহজাহ করিবেন ইমামত।
বাষট্টি সালে গম্বুজের উপর,
রব পাঠাইবেন রহমত।

ব্যাখ্যাঃ এখানে লেখক বলেছেন যে, জাহজাহ যে মসজিদে ইমামতি করবেন সেটার রং হবে সাদা। গম্বুজ বিশিষ্ট। 
আর ২০৬২ সালে রব ঐ দামেস্কের মসজিদের সাদা মিনারে রহমত সরূপ কিছু পাঠাইবেন।

আছরের সময় দেখবে সবাই,
হযরত ঈসা (আঃ) এর আগমন।
সাদা পোষাকে নামিবেন তিনি,
দু’ পাশে ফেরেস্তা দুজন।

ব্যাখ্যাঃ আল্লাহু আকবার। লেখক জানিয়েছন, ২০৬২ সালে দামেস্কের সাদা মসজিদে আছরের ছলাতের সময় গম্বুজের উপর সাদা পোষাক পরিহিত অবস্থায়, দুই ফেরেস্তার কাধে ভর করে হযরত ঈসা (আঃ) আসমান থেকে নামবেন। ঐ মসজিদেরই ইমাম হলেন "জাহজাহ"! তিনি ঐ সময় ইমামতির জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকবেন।

প্যারাঃ (৮১)
ইমাম জাহজাহ জানাইবেন তাকে,
ছলাতে ইমামতির আহ্বাবান।
হযরত ঈসা (আঃ) বলবেন তাকে,
এ তো আপনারই সম্মান।

ব্যাখ্যাঃ একটি চিরাচরিত হাদিছ, যখন গম্বুজের উপর ঈসা (আঃ) নামবেন তখন,
মুসলমানদের আমির ঈসা (আঃ) কে বলবেন, "আসুন ছলাতের ইমামতি করুন"
 
তখন ঈসা (আঃ) বলবেন, "না বরং আপনাদের আমীর তো আপনাদের মধ্যেই"।
সারা বিশ্বের মুসলমানেরা ধরে নিয়েছে যে সেই ইমাম হবেন ইমাম মাহদী আর তার পিছনেই ঈসা (আঃ) ছলাত আদায় করবেন।
কিন্তু কোথাও ইমাম মাহদির নাম বলা হয়নি। বরং বলা আছে, "মুসলমানদে আমীর"। তাই হতেই পারে যে, সেই আমীর হলেন ইমাম জাহজাহ।

যুলফিকর হাতে "লুদ্দ" এর ফটকে,ঈসা (আঃ) তখন,
হত্যা করিবেন, কানা দাজ্জালকে,
করিয়া আক্রমন।

ব্যাখ্যাঃ আসমান থেকে নামার পর, ২০৬২ সালে "লুদ্দ" নামক শহরের প্রথম ফটক বা গেইটের সামনে হযরত ঈসা (আঃ), দাজ্জাল কে যুলফিকর তরবারি দ্বারা কতল করবেন। 
(যুলফিকর তরবারি হলো মুহাম্মাদ (
ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর তরবারি। যা জামিল হাতে পাবে ভন্ড ঈসা কে হত্যা করার জন্য। অতপর, হযরত ঈসা (আঃ) কাছে পৌঁছে দিবে, দাজ্জাল কে হত্যা করার জন্য)

প্যারাঃ (৮৩)
ক্ষমতা হস্তান্তর করিবেন জাহজাহ,
ঈসা (আঃ) করিবেন শাষন।
রবের রহমতে 
দ্বিতীয় আগমনে,
তিনি পাইবেন উচ্চ আসন।

ব্যাখ্যাঃ ইসা (আঃ) এর আগমনের পর ইমাম জাহজাহ বিশ্ব শাষন ভার তার হাতে তুলে দিবেন। তখন ঈসা (আঃ) ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী বিশ্বশাষন করতে থাকবে। তারপর এই পৃথিবীতে আর কখনো কোন খলীফা আসবেন না বা কেউ খলীফা হবেন না।

সু-শৃঙ্খলময় শান্তি বিশ্বে,
করিবে বিরাজমান।
ছিয়াষট্টি তে ‘দাব্বাতুল আরদ’ এর,
হইবে উত্থান।

ব্যাখ্যাঃ দাজ্জাল কে হত্যা করার পর, ঈসা (আঃ) পৃথিবী তে সুখশান্তি দ্বারা শাষন করতে থাকবে। এমন সময় ২০৬৬ সালে "দাব্বাতুল আরদ্" নামক একধরনের প্রানী জমিনের নিচ থেকে বের হয়ে আসবে। 
কুরআনের সুরা নামলের ৮২ নং আয়াতে এই প্রানীর কথা বলা আছে। আর হাদিছে বলা আছে, এই প্রানির আগমন হলো কিয়ামত নিকটবর্তী হবার বিরাট একটি আলামত।

প্যারাঃ (৮৫)
পাখনা বিহীন, অসংখ্য প্রানী,
বিড়ালের অবয়ব।
বাকশক্তিহীন দাত বিশিষ্ট তাদের,
গজবে নিঃশেষ করিবেন রব।

ব্যাখ্যাঃ এখানে বলা হয়েছে, এই দাব্বাতুল আরদ্ এর কোন পাখনা থাকবে না। তারা সংখ্যায় অগনিত হবে। দেখতে প্রায় ই বিড়ালের আকৃতির হবে। তাদের দাতের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ থাকায় বোঝা যাচ্ছে দাতই তাদের মূল হাতিয়ার হবে। আর বিশেষ উল্লেখ্য যে, তারা কথা বলবে না। যেহুতু কুরআনে বলা আছে যে,
“যখন ঘোষিত শাস্তি তাদের উপর এসে যাবে তখন আমি মাটির গহবর হতে বের করবো এক জীব(দাব্বাতুল আরদ্), যা তাদের সাথে কথা বলবে, এ কারনে যে, তারা আমার নিদর্শনগুলো অস্বীকার করেছে”।
(সুরা নামাল। আয়াতঃ ৮২)
তার প্রেক্ষিতে লেখল তার মুল কিতাবে একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন যে, 

হযরত মিকাইয়া (আঃ) এর যামানায়, একজন নষ্টা নারী অন্যের দ্বারা গর্ভপাত করে একটি বাচ্চাপ্রসব করে বলে যে, এ বাচ্চা টি মিকাইয়ার বাচ্চা। তখন সবাই জড়ো হয়ে সত্য যানতে চাইলে, হযরত মিকাইয়া (আঃ) বাচ্চাটির পেটে হাত দিয়ে বলে যে, হে বৎস্য তোমার পিতার নাম কি? তখন নাবালক টি সঠিক উত্তর দেয়, যে মিকাইয়া নয় আমার বাবা "অমুক"।
এবং ইউসুছ (আঃ) এর সময়ও ইউসুফ কে নির্দোষ প্রমান করতে একটি নাবালোক বাচ্চা কথা বলে সাক্ষী দেয়।
 দ্বারা এ কথা বলা যাবে না যে, বাচ্চা দুটি সবসময়ই কথা বলেছে/তারা কথা বলতো।বরং একথা বলা যায় যে, বাচ্চা দুটি একবার করে কথা বলেছে। 
*কারন তা ছিলো, নবীদের নির্দোষ প্রমান করা এবং তা ছিলো হযরত মিকাইয়া (আঃ) ও হযরত ইউসুফ (আঃ) এর মুজিজা। যেন সবাই নিদর্শন পেয়ে যায়, কেউ অস্বীকার না করে।
*ঠিক তেমনি, এই দাব্বাতুল আরদ্ ও ঐ শিশুদের ন্যয় ১ বার কথা বলবে। যাতে করে যারা আল্লাহর নিদর্শন মানতো না তারা সঠিক জবাব পেয়ে যায়।
হযরত ঈসা (আঃ) তাদের উত্থান সমন্ধে জিজ্ঞাসিত করলে আল্লাহর হুকুমে, তারা মানুষের সামনে একবার কথা বলবে। আর তা হবে হযরত ঈসা (আঃ) এর মুজিজা।
আয়াত দ্বারা একথা বোঝানো হয়নি যে, দাব্বাতুল আরদ্ সবসময়ই কথা বলবে। বরং তারা একবার কথা বলবে। কারন, কুরআনে বলা আছে,
"তারা কথা বলবে এ কারনেই যে, মানুষ আল্লাহর নিদর্শন সমুহ অস্বীকার করেছে।"
(সূরা নামল: ৮২)
তাই তারা একবার কথা বলবে যেন, অস্বীকারকারী গন স্বীকার করে নেয়।তিনি লিখেছেন, এটাই ঐ আয়াতের সঠিক তাফসির।
*তারা মানুষকে অত্যাচার করবে। অতপর, কোন এক ব্যধিতে ঐ বছরই তাদের ধ্বংস হবে।
বিঃ দ্রঃ উপরক্ত ব্যাখ্যা টি লেখক "আস-শাহরান" এর নিজের লেখা ব্যাখ্যাই প্রচার করা হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

প্যারাঃ (৮৬)
বছর শেষেই প্রাচির ভাঙ্গিয়া,
ইয়াজুজ-মাজুজ এর দল।
প্রকাশ পাইয়া আক্রমন চালাবে,
তারা জনশক্তিতে সবল

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন যে, ২০৬৬ সালে দাব্বাতুল আরদের উত্থান ও পতনের পরবর্তী বছরই ২০৬৭ সালে যুলকার নাঈনের প্রাচির ভাঙ্গিয়া ইয়াজুজ-মাজুজ এর দল পৃথিবীর বুকে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে । তারা বের হয়ে এসে মানব সমাজে আক্রমন চালাবে। আর তারা জনশক্তিতে ব্যপক সবল হবে।

প্যারাঃ (৮৭)
হাতে থাকিবে তীর-ধনুক আর,
আকারে থাকিবে ভিন্ন।
পশ্চাৎ হইবে পশুর ন্যয়,
দেহ সবল ও জীর্ন শীর্ন।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন, ইয়াজুজ মাজুজের প্রধান অস্রই হবে তীর-ধনুক। আর তারা আকারে বিভিন্ন ধরনের হবে। কেউ লম্বা, কেউ বেটে, কেউ মোটা, কেউ চিকন ইত্যাদি।
তাদের পিছন হবে পশুর মত। অর্থাৎ, পা হবে এমন যাতে করে লাফাতে পারে(যেমনঃ ক্যাংগারু) । আর হয়তো লেজও হতে পারে।
(আল্লাহই ভালো জানেন)

মানব জাতীর অভিশাপ স্বরূপ,
আগমন হইবে তাদের।
হযরত 
ঈসা(আঃ) করিবেন দোয়া,
সাহায্য চাইবেন রবের।

ব্যাখ্যাঃ এই ইয়াজুজ মাজুজ এর আগমন মানুষের জন্য অভিশাপ, গজব ও শাস্তির হবে। তখন ঈসা (আঃ) আল্লাহর দরবারে সাহায্য চাইবেন।

প্যারাঃ (৮৯)
দুই-তৃতীয়াংশ মানব হত্যা করিবে,
প্রকাশ পাওয়ার পর।
আসমান থেকে আসবে গজব,
তাদের ঘাড়ের উপর।

ব্যাখ্যাঃ ইয়াজুজ মাজুজ প্রাচির ভেঙ্গে বের হয়ে আসার পর, ঐ সময়ের পৃথিবীর ৩ ভাগের ২ ভাগ মানুষকে হত্যা করবে। তারপর, মহান আল্লাহ তাদের ঘাড়ের উপর কোন একটি অসুখ দিবে। যা মহামারী আকার ধারন করবে।

প্যারাঃ (৯০)
প্রকাশ পাওয়ার সনেই হবে, 
ধ্বংস পঙ্গপাল।
সুখ ও শান্তি আসিবে ফিরিয়া,
দুঃখ যাইবে অন্তরাল।

ব্যাখ্যাঃ এখানে লেখক,আস শাহরান ভবিৎষতদ্বানী করেছেন যে, যে বছর ইয়াজুজ মাজুজের প্রকাশ হবে ঐ বছরের শেষের দিকে তারা গজবে শেষ হয়ে যাবে।
অর্থাৎ, ২০৬৭ সালেই বের হয়ে ২০৬৭ সালেই মারা যাবে।

শাষন আমল চলিবে ইছা(আঃ)-এর,
তেতত্রিশটি বৎসর।
ওয়াফাত হবে, কবরস্থ হবে,
এই দুনিয়ার উপর।

ব্যাখ্যাঃ হযরত ঈসা (আঃ) দুনিয়ায় আগমন করে ৩৩ বছর জিবিত থাকবেন। তারপর, তার ওয়াফাত(মৃত্যু) হবে। মুসলমানেরা তার জানাযার ছলাত আদায় করবে এবং দুনিয়াতে তাকে কবরস্থ করবে।

প্যারাঃ (৯২)
এর পর চলবে দুই-তিন বর্ষ,
শান্তিময় বসুন্ধরা।
তারপর সবাই ধীরে ধীরে হবে,
আদর্শ ও ঈমান 
হারা

ব্যাখ্যাঃ বলা হয়েছে, হযরত ঈসা (আঃ) এর মৃত্যুর পর ২-৩ বছর তার আদর্শ মতে পৃথিবী বাসী চলতে থাকবে। তার পর সবাই ধীরে ধীরে ঈমান হারা হতে থাকবে। শয়তানকে অনুসরন করতে থাকবে।

প্যারাঃ(৯৩)
অশ্লীলতা, পাপ-পঙ্কিলতায়,
ভরে যাবে ধরণী ফের।
কাবাগৃহের উপর আক্রমন করিবে,
সৈন্য রা জর্ডানের।
ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন যে, ঈসা (আঃ) এর মৃত্যুর ১০ বছরের মধ্যেই মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হয়ে উঠবে। জঘন্যতম অন্যায় তাদের দ্বারা হতে দেখা যাবে। অতঃপর, যুগ যুগের পবিত্র কাবা গৃহের উপর, বর্তমান জর্ডানের ঐ সময়ের নেতার নেতৃত্বে অসংখ্য সেনাবাহিনী আক্রমন করবে।

প্যারাঃ (৯৪)
কাবাগৃহ ভাঙ্গবে জর্ডানী হাবশি,
একুশশত দশে তা হবে নিশ্চিহ্ন।
প্রকাশ্য জ্বেনায় মাতিবে তারা,
রাখিবে পাপের পদচিহ্ন।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন, যার নেতৃত্বে কাবাগৃহ ভাঙ্গা হবে, সে জর্ডানের একজন হাবশি বংশউদ্ভোত ব্যাক্তি হবে। এই মর্মাহত ঘটনা ২১১০ সালে ঘটবে। (ভবিৎষতদ্বানী অনুযায়ী)
আর তাঁর কথা হাদিসেও আছে, যেখানে মহানবী (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামভবিৎষতদ্বানী করেছিলেন।

কাবাগৃহ ভাঙ্গার দশ বর্ষ পর,
আসিবে শিতল হাওয়া।
মুমিনেরা প্রান 
হারাইবে তাতে,
এটাই রবের চাওয়া।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন যে, কাবাঘর যখন জর্ডানের এক হাবশী ভেঙ্গে ফলবে(২১১০) তার ১০ বছর পর (২১২০ সালে) এক ধরনের শীতল হাওয়া আসবে। তার ফলে, যে সকল ঈমানদার মুমিনগন পৃথিবীতে টিকেছিলো তাদের জান কবজ হয়ে যাবে। তারপর গোটা বিশ্বে তিল পরিমান ঈমানও আর থাকবে না। 
(হাদিছে উল্লেখ্য আছে, শীতল হাওয়া দ্বারা মুমিনদের রুহ কবজ, কিয়ামতের অতি নিকটবর্তী আলামত)
তারপরে, পরে রবে শুধু ঈমানহারা বেঈমান, নিকৃষ্ট হতভাগা জাতী।
প্যারাঃ (৯৬)
ঈমান ছাড়া পৃথিবী বাসী,
হইবে পশুর অধম।
নিকৃষ্টতার চুড়ায় পৌছাবে,
করিবে সকল সীমালঙ্ঘন।

ব্যাখ্যাঃ লেখক বলেছেন, যখন কোন মুমিন ব্যাক্তি থাকবেনা, তখন বাকি নরকিটরা এতটা অশ্লীলতায় ডুবে যাবে, এমন নিকৃষ্ট কাজ করবে, যা ইতপুর্বে কোন জাতিই করেনি। তারা সকল সীমা ছাড়িয়ে যাবে।

প্যারাঃ(৯৭)
বছর শেষেই পশ্চিম দিকে,
হইবে সূর্যোদয়।
তাওবাহর দরজা হইবে বন্ধ,
আসিবে কিয়ামতের মহালয়।

ব্যাখ্যাঃ লেখক (আস-শাহরান) বলেছেন, ২১২০ সালে শীতল হাওয়া আসার ১ বছর শেষে বা ১ বছর শেষ হবার পর যে কোন সময়, যে কোন মুহুর্তে, পশ্চিম আকাশ থেকে সূর্য উদয় হবে। আর আমরা জানি, পশ্চিমে সুর্য উদয় যে দিন হবে, তখন থেকেই তাওবাহর দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। আর ঐ দিনটিই হবে, শেষ দিন, কিয়ামতের দিন।

প্যারাঃ (৯৮)
চলে আসিবে সেই মহা কিয়ামত,
বেশি দূরে নয় আর।
পৃথিবী বাসীকে এই কবিতায়,
করিলাম হুসিয়ার।

ব্যাখ্যাঃ লেখক, সতর্ককারী স্বরূপ সতর্ক করে বলেছেন যে, কিয়ামত বেশি দূরে নয়। খুব দ্রুতই চলে আসবে। অতএব, সময় থাকতেই সাবধান হও!

প্যারাঃ (৯৯)
গায়েবী মদদে পাইলাম কথন,
দুই-সহস্র-দশ-আট
 সালে।
অদ্ভুত এই "আগামী কথন'"
ফলে যাবে কালে কালে।

ব্যাখ্যাঃ লেখক আস-শাহরান বলেছেন, এই কবিতার জ্ঞান সে গায়েবী মদদে লাভ করেছে।
আর তিনি বলেছেন, অদ্ভুত ভাবে সবাই দেখতে পাবে, কালে কালে এই আগামী কথন ঠিকই ফলে যাবে।

প্যারাঃ (১০০)
রহস্যময় এই পুঁথিগাথা,
খোদায়ী মদদে পাওয়া রতন।
শেষ করিলাম, আমি 
এক্ষণে,পৃথিবীর “আগামী কথন”।

ব্যাখ্যাঃ লেখক (আস-শাহরান) বলেছেন, আগামী কথন একটি রহস্যময় পুঁথিগাথা। যা তিনি খোদায়ী মদদে পেয়েছেন অর্থাৎ, আল্লাহ নিজেই তাকে দান করেছেন। আর এই “আগামী কথন” লেখকের কাছে অমুল্য রতন। এই বলে তিনি তার আগামী কথনের সমাপ্তি ঘোষনা করেছেন।

@আগামি কথন   #আগামিকথন #আগামিকথন2020

No comments:

Post a Comment

ALHAMDULILLAH MEDIA