গাজওয়াতুল হিন্দ বা মালহামা কি? - ইসলাহ

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাঁর নিকট তাওবা করি। অত:পর আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আল্লাহ তাআলা কবুল করুক। এই সময়ে ইসলামি ব্লগ অত্যন্ত জনপ্রিয় উঠেছে। এই বিপ্লবের গনজোয়ারে ইসলামের সঠিক ও চূড়ান্ত বার্তা পৌঁছাতে পোষ্ট গুলো বেশি বেশি শেয়ার করুন। আল্লাহ তা আলা আমাদের কবুল করুন। আমিন

Breaking

Home Top Ad

কুরআন ও হাদিসের ভবিষ্যৎবাণী গুলো সবাইকে জানিয়ে সচেতন করতে চাই।

Post Top Ad

এখানে এ্যাড দেওয়া হবে

Tuesday

গাজওয়াতুল হিন্দ বা মালহামা কি?


"গাজওয়াতুল হিন্দ'' বা "মালহামা" বা "হিন্দুস্তানের যুদ্ধ" যাই বলুন না কেন সেটা কী??

গাজওয়াতুল হিন্দ হল রাসূলুল্লাহ (সা.) এর করা  ভবিষ্যদ্বাণীতে
বর্ণীত ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম ও মুশিরকদের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য চূড়ান্ত যুদ্ধ। যাতে মুসলিমরা জয় লাভ করবে। অতি শীঘ্রই হতে যাওয়া এই যুদ্ধ সম্পর্কে কী বলছে হাদীসসমূহ চলুন জেনে নিই :

(১) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর প্রথম হাদিস-
আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
“আল্লাহর রাসুল (সা:) আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব”।
(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)

(৩) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর দ্বিতীয় হাদিস-
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন,
“অবশ্যই আমার উম্মতের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে । এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন)। এবং যে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবন-ই-মারিয়াম কে সিরিয়ায় (শাম) পাবে”।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) আরো বলেন,
“আমি যদি সেই গাজওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ্ (সুবঃ) আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা (আঃ) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত । ও মুহাম্মাদ (সাঃ) ! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আঃ) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর একজন সাহাবী”।
বর্ণনাকারী বলেন যে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মুচকি হাসলেন এবং বললেনঃ ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন’ অথবা "বহু দূর,বহু দূর"। (আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯)

(৪) হযরত সাওবান (রাঃ) বলেন,রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ “আমার উম্মাহর একদল লোক হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তাদের সফলতা দান করবেন, জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ) এর সাথী হবে।” (সুনানে নাসাঈ,খ. ৬,পৃ. ৪২)

এই হাদীসগুলো দিয়ে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, এই যুদ্ধটা নির্ধারিত আর এর গুরুত্ব কতখানি।অনেকেই বলে থাকেন যে, মুহাম্মাদ বিন কাসিম-এর সিন্ধু (ভারত) অভিযানের মধ‍্য দিয়েই 'গাজওয়াতুল হিন্দ' হয়ে গেছে। আবার কেউ কেউ মনে করে থাকেন যে, সুলতান মাহমুদ গজনভী'র মাধ‍্যমেও নাকি 'গাজওয়াতুল হিন্দ' হয়ে গেছে! যারা এরকম ভাবছেন তারা চরম এক ভ্রান্তির মধ‍্যে অাছেন। বিশ্বের অনেক বড়-বড় স্কলার, ইসলামি বিশেষজ্ঞ এবং আলেমদের মতও এটাই। এখানে বিষয়টার অত ব‍্যাখ‍্যা-বিশ্লেষণে না-গিয়ে শুধু দু'টো প্রশ্নের উত্তর বের করার চেষ্টা করলেই অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।

এক, হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী 'গাজওয়াতুল হিন্দ' হবে সমগ্র ভারত উপমহাদেশের মধ‍্যে। কিন্তু মুহাম্মাদ বিন কাসিম বা সুলতান মাহমুদ গজনভী'র অভিযান সেভাবে হয়নি! সবচেয়ে বড় কথা, তাদের লড়াইটাও শুধু হিন্দু-মুশরিকদের মধ‍্য হয়নি। ইতিহাসের পাতা উল্টিয়ে দেখলে প্রমাণ মিলবে!

দুই, 'গাজওয়াতুল হিন্দ' হয়ে যাবার পরে সমগ্র ভারত থেকে 'হিন্দুত্ববাদ' মিটে যাবার কথা। কিন্তু তাদের অভিযানের পর সেটাও হয়নি।

এভাবে বললে আরো অনেক কিছুই বলা যায়। তাই 'গাজওয়াতুল হিন্দ' যে সামনে হবে এটা নিয়ে সন্দেহ নাই। আর এসবের কারণগুলোও খুব স্পষ্ট। নবী করীম (সা:)- এর কথা অনুযায়ী খোরাসান (বর্তমান আফগানিস্থান) থেকে কালিমাখচিত কালো পতাকাধারীদের উত্থান এবং তাদের কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া; পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ভারতের কাশ্মীর সীমান্তে ৭ লক্ষ সেনা মোতায়েন, পাক-ভারত-বাংলাদেশের হকপন্থী ইসলামী দলগুলো আলোচনায় উঠে আসা, পানি নিয়ে ভারতের সাথে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুসলিমদের নির্যাতন নিয়ে ভারতের ভেতরে মুসলিমদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, সেভেন সিস্টারস তথা ভারতের ৭ টি অঙ্গরাজ্যের স্বাধীনতার দাবি নিয়ে আন্দোলন, হিন্দুত্ববাদের উগ্রতা, মায়ানমারের গণহত‍্যা, মুসলিমদের বিনা অপরাধে নির্যাতন, ভারতে সমকামিতার বৈধতা, পরকিয়ার ব‍ৈধতা, মসজিদে নামায পড়া এবং মসজিদের জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, মিথ‍্যাবাদিদের দৌরাত্ম, বিচারহীনতা, অন‍্যায়ভাবে জেল-জুলুম ইত‍্যাদি অনেক কারণগুলোই 'গাজওয়াতুল হিন্দ'-এর প্রতি ইঙ্গিত করছে।

No comments:

Post a Comment

ALHAMDULILLAH MEDIA