আবু বকর (রা) খলিফা হয়েছেন মাত্র। কিন্তু রাসুলের (সা) মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পরার সাথে সাথে পুরো আরবে নানা বিদ্রোহ, ভণ্ড নবী দাবীদাররা মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। একদল দাবি করল তারা আর যাকাত দিবে না। একদল আর নামাজ পড়বে না। বিদ্রোহী কিছু গোত্র মদিনায় আক্রমণের পরিকল্পনাও করা শুরু করে দিল।
নতুন খলিফা আবু বকরের (রা) জন্য সময়টা খুবই কঠিন। কিন্তুু এদিকে
রাসুলুল্লাহ (সা) ইন্তেকালের পূর্বে যে নির্দেশগুলো দিয়ে গিয়েছিলেন তার একটি ছিল উসামা বিন যায়েদ (রা) এর নেতৃত্বে রোমানদের বিপক্ষে জারদন ও বলকায় একটি সেনাদল পাঠান। কিন্তু এদিকের এত সমস্যার ও বিপদের সম্ভাবনা দেখে সাহাবীরা বললেন আপাতত এই সমস্যাগুলো সমাধান করি, বাইরে সৈন্য পরে পাঠালেও হবে। মদিনা, মক্কা আর তায়েফ ছাড়া বলতে গেলে আর কোন জায়গায় নিয়ন্ত্রন নেই। যেকোনো সময় হয়ত বিদ্রোহীরা শেষ করে দিবে ইসলামি রাষ্ট্রকে।
কিন্তু রাসুল (সা) এর সবচেয়ে কাছের সাথী আবু বকর উত্তর দিলেন, ' এই সৈন্য পাঠানোর পরে যদি কোন জন্তু এসে আমাকে টুকরো টুকরো করে ফেলে তবুও রাসুল যার নির্দেশ গিয়েছেন আমি তা থেকে বিরত হব না।'
তাই শুরু হল মিশনের প্রস্তুতি।
সৈন্যদলকে বিদায় দেবার পূর্বে খলিফা দশটি নির্দেশ দিলেন উসামা বিন যায়েদকে (রা)
১. কোন কিছু আত্মসাতের নিকটেও যাবে না।
২. মিথ্যা বলবে না
৩. বিশ্বাস ভঙ্গ করবে না
৪. নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের হত্যা করবে না
৫. ফলদায়ী গাছ কাটবে না
৬. খাবারের প্রয়োজন ছাড়া কোন উট, গরু বা ছাগল হত্যা করবে না
৭. যাদের পাবে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিবে।
৮. যাদের সাথে সাক্ষাত হবে তাদের যথাযথ সম্মান দিবে
৯. যখন তোমার কাছে খাবার আসবে আল্লাহর নাম নিয়ে খাওয়া শুরু করবে
১০. গির্জায় আশ্রয় নেওয়া ইহুদি, খ্রিস্টানদের সাথে লড়বে না।
উসামা (রা) তার মিশনে সম্পূর্ণ সফল হয়ে বিশাল সম্পদ নিয়ে ফিরলেন চল্লিশ দিন পর। আবু বকর (রা) কঠিন সময়ে রাসুলের (সা) নির্দেশের উপর খুবই ঝুকি নিয়ে অটল থেকে ছিলেন। আর তাই এর ফলও পেলেন খুবই দারুণ।
যারা বিদ্রোহ করতে চাচ্ছিল তারা দেখল রাসুল (সা) নেই ত কি হয়েছে। ইসলামের শক্তি একটুও কমেনি। রোমানদের বিপক্ষে সাফল্য বিদ্রোহী ও ভণ্ড নবীদের অন্তরে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়ায় তারা মদিনা আক্রমণের আশা সব বাদ দিতে বাধ্য ত হলই। নিজেদের দলে নেওয়ার মত মানুষও আর খুঁজে পেল না।
যারা যাকাত দিতে চাচ্ছিল না। তারা নিজে থেকেই যাকাত দিতে রাজি হয়ে গেল। আর যুদ্ধ পাওয়া সম্পদ মুসলিম রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক ভাবেও শক্ত করল। আর খলিফা এখন বিদ্রোহীদের দমনে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারলেন।
আবু বকর (রা) ইসলামের সবচেয়ে কঠিন সময়ে রাসুলের (সা) নির্দেশের প্রতি পর্বত পরিমাণ ভরসা, আস্থা ও দৃঢ়তা দেখিয়ে সর্বকালের মুসলিমদের দেখিয়ে গেলেন। যত যাই হোক না কেন, রাসুলের (সা) আদেশ মানো। অন্য কিছু খুঁজো না। সাফল্য তোমরা পাবেই।
Post Top Ad
Saturday

রাসুলের (সা) নির্দেশ - ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
Tags
# ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
Share This
About Islam
Newer Article
আমর ইবনে আ’স (রা) ও যিশুর ভাঙ্গা মূর্তি - সাহাবীদের কাহিনী
Older Article
আল্লাহর বান্দা - ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
Tags: Alhamdulillah, Media, Alhamdulillah, Blog
ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment